ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক এগিয়ে। তবে এই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে 'অন্য' এক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেখা যাবে বলে দাবি করছেন দেশটির অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স জানান, বড় টুর্নামেন্ট বা বড় ম্যাচ এলেই তার দলের মানসিক চাপে ভেঙে পড়ার গল্প এবার কেউ দেখবে না।
Published : 26 Feb 2015, 04:54 PM
শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৯টায়।
এই ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে মোট ৫৬ বার। ৪২টি জয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাফল্যের পাল্লাটাই ভারী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১৩টি, বাকি ম্যাচটির ফল হয়নি।
দুই দলের সবশেষ মুখোমুখি হওয়া ১৮ ম্যাচেও সাফল্যের হিসেবটা দক্ষিণ আফ্রিকার দিকেই ঝুঁকে আছে, ১৬টি জয় তাদের। বিশ্বকাপের আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে সিরিজেও ৪-১ ব্যবধানে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সব মিলিয়ে সিডনি ম্যাচের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারকে কঠিন এই অতীত নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হয়। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে হোল্ডার অবশ্য ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয়ের কথা বলেন।
"এটা ভিন্ন এক খেলা। আমরা বিশ্বকাপে এসেছি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর এখন শেষ।"
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বিশ্বকাপের শুরুটাও ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই আইসিসির সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে যায় তারা। তবে পরের দুটি ম্যাচে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতে আত্মবিশ্বাসের পালে যথেষ্ট হাওয়া ভরে নিতে পেরেছে হোল্ডারের দল।
এই ম্যাচের আগে তাই হোল্ডার বলতে পারলেন, "আমাদের দুটি জয় আছে, সুতরাং এই ম্যাচে কিছু গতি নিয়ে যাচ্ছি আমরা।"
ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন নিজেদের আত্মবিশ্বাসের বেলুনে হাওয়া ভরে নিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বেলুনটা তখন অনেকটাই চুপসে যাওয়ার কথা। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে বিশ্বকাপে পা রাখা দলটি নিজেদের সবশেষ ম্যাচে ভারতের কাছে বাজেভাবে হারে।
তবে ডি ভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি, ডেভি মিলার, ডেল স্টেইন, মর্নে মরকেল...দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান আর বোলার; সবাই খুব ফর্মে আছেন।
ফর্মে থাকা অবস্থায় যেকোনো দিন এদের যে কেউ একাই প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে হওয়া কথার লড়াইয়ের চাপে যেন পিষ্ট হয়ে যান তারা সবাই।
ভারতের ৩০৭ রানের জবাব দিতে গিয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ। মাত্র ১৭৭ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ১৩০ রানের এই হারের পর আবার চাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ভেঙে পড়ার প্রসঙ্গ ওঠে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য দলের আত্মবিশ্বাস ঠিকই আছে বলে উল্লেখ করে ডি ভিলিয়ার্স।
"আমরা ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের আগের ম্যাচের পারফরম্যান্সের পর দল নিয়ে অনেক কিছুই বলা অনেক সহজ। কিন্তু ওখানে যা হয়েছে, সেটা হতাশাজনক। …আমি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করি, দল ভালো অবস্থায়তেই আছে।"
প্রসঙ্গ যখন বড় উপলক্ষের, স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বকাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসেব সামনে চলে আসে। বিশ্বকাপে মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাই। ৫ ম্যাচের ৩টিতে জেতে তারা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় দুটি।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ৫বার মুখোমুখি হয় তারা। এর মধ্যে ২০১৩ সালের কার্ডিফে সবশেষ ম্যাচটি টাই হয়। বাকি চারটি ম্যাচে দুই দল সমানে সমান। দুটি করে জয় তাদের।
দুই দলের অধিনায়কের লড়াই করার প্রত্যয় আর বড় টুর্নামেন্টে 'কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান' অবস্থা; এই আবহ আর পরিসংখ্যান বিশ্ব জোড়া ক্রিকেট অনুসারীদের রোমাঞ্চকর একটি ম্যাচ দেখারই যেন ইঙ্গিত দিয়ে রাখছে।