চলতি মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছর পূর্ণ হল ইমরুল কায়েসের। এত দিনেও পায়ের নিচে মাটি শক্ত নয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের। এখনও লড়াই করছেন টিকে থাকার সংগ্রামে। খুঁজে ফিরছেন জাতীয় দলে নিজের জায়গা।
Published : 22 Oct 2018, 02:06 AM
বাদ পড়া আর লড়াই করে দলে ফেরা- গত এক দশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সংক্ষেপে এটাই ইমরুলের ক্যারিয়ারের চিত্র। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলের দাপুটে জয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে বড় অবদান রাখা এই ওপেনার জানান, কখনও হাল না ছাড়ার মানসিকতা তাকে বারবার দলে ফিরিয়েছে।
“আমার সঙ্গে অনেক ক্রিকেটারের একই সময়ে অভিষেক হয়েছে, খেলেছে। তাদের অনেকে এখন দৃশ্যপটেই নেই। আমার মনে হয় যে, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি যে, আমার ক্যারিয়ার এত কম সময়ে শেষ হতে পারে না। আমি সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখি।”
“যতদিন খেলব, জাতীয় দলে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখব। যেদিন হয়তো জাতীয় দলে খেলার সুযোগ থাকবে না, সেদিন নিজেই বলব থ্যাংক ইউ।”
২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ইমরুলের। দেশের হয়ে এই সংস্করণেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ৭৪ ম্যাচ খেলেন তিনি।
সেই বছরই নভেম্বরে ব্লুমফন্টেইনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় ইমরুলের। ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত খেলেন ১৬ টেস্ট। পরের দুই বছর এই সংস্করণে ছিলেন উপেক্ষিত। গায়ে লেগে গিয়েছিল ওয়ানডে বিশেষজ্ঞের তকমা।
২০১৪ সালে টেস্টে ফেরার পর প্রথম ইনিংসে করেন সেঞ্চুরি। তারপর থেকে এই সংস্করণে মোটামুটি নিয়মিত ইমরুল। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ পেতে তাকে লড়াই করতে হয় নিত্যদিন।
তামিম ইকবালের চোটে হঠাৎ করেই গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে খেলেন ওয়ানডে সিরিজে। তার আগে অনেক দিন এই সংস্করণে সেভাবে সুযোগ মিলছিল না। সেই সিরিজে খুব একটা খারাপ না করলেও জায়গা হারান দলে। সেই তামিমেরই চোটে এশিয়া কাপের মাঝপথে আবার ফিরেন স্কোয়াডে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলে কিছুটা সময়ের জন্য দলে নিজের জায়গা নিশ্চিত করেন ইমরুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে দলে থাকার দাবি আরেকটু জোরালো হল তার।
খুব একটা খারাপ না করেও বাদ পড়া নিয়ে অভিযোগ নেই ইমরুলের। জানান, প্রতিবার বাদ পড়ার পর আরও দৃঢ় হয়ে ফিরতে উন্মুখ থাকেন তিনি।
“এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। আমি ভালো খেলেছি, এটাই বড় ব্যাপার। যখনই সুযোগ পাই, চেষ্টা করি ভালো খেলার। বাকিটা যে যেভাবে নেয়, তাদের ব্যাপার। আমি চেষ্টা করি, সুযোগ পাওয়ার জন্য।”
“আমি যখন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই তখনই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। দেশের হয়ে খেলা অনেক সম্মানের। যখনই সুযোগ পাই তখনই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি। কখনও সফল হই কখনও হই না। কিন্তু আমি আমার পরিশ্রম চালিয়ে যাই এবং সবকিছুতে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি।”
ওয়ানডেতে সবশেষ ১৮ ইনিংসে ইমরুলের পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস সাতটি। যার দুটিকে তিন অঙ্কে নিয়ে গেছেন এই ব্যাটসম্যান। এই ছন্দে থাকাটার সময়টা যতটা সম্ভব দীর্ঘ করার দিকে মনোযোগ ইমরুলের।
“ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই। কেউ ভালো খেলবে, আবার ভালো খেলতে খেলতে খারাপ খেলবে। কেউ কখনও একই ধারাবাহিকতায় টানা খেলতে পারে না। বাদ পড়াটা খেলাটারই অংশ। তবে ফিরে আসতে আপনাকে মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে।”