ওয়ানডে সিরিজের আগে শেষ অনুশীলন সেশনে পুরোপুরি পেশাদার শ্রীলঙ্কা। পেশাদারিত্বের দিক থেকে পিছিয়ে ছিল না বাংলাদেশও। তবে টেস্ট সিরিজ ড্রয়ের খুশির রেণু তখনও ছড়িয়ে ছিল অতিথি শিবিরে।
রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শনিবার প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। টেস্টে সিরিজ ড্র হওয়ার পর এই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দিকে তুমুল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে দুই দল। লঙ্কানরা মুখিয়ে ওই হারের পর ঘুরে দাঁড়াতে, বাংলাদেশ সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে চায় বহুদূর।
বাংলাদেশের এক দিন আগে ডাম্বুলায় এসেছে শ্রীলঙ্কা। গত বৃহস্পতিবার কৃত্রিম আলোয় অনুশীলন করেছে উপুল থারাঙ্গার দল। শুক্রবার দুপুরের কড়া রোদে। কলম্বো টেস্টের হারে দলটি যে কতটা তেতে আছে সেটা বোঝা গেল অনুশীলন দেখে।
চোটের জন্য আগেই নিয়মিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জলো ম্যাথিউসকে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রথম ওয়ানডেতে খেলা হবে না উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকভেলার। প্রস্তুতি ম্যাচে পাওয়া চোটের জন্য প্রথম দুই ওয়ানডে থেকে ছিটকে গেছেন কুসল পেরেরা। তাদের জায়গায় যারা এসেছেন তাদের নিয়ে আশাবাদী থারাঙ্গা।
গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের হারানো দলটি মরিয়া জয় দিয়ে শুরু করতে। নেটে ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে সেরেছে প্রস্তুতি। তিন নেট ঘুরে-ঘুরে সব ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করেছেন লম্বা সময় ধরে। টেস্ট সিরিজ থেকে স্পিনের বিপক্ষে প্রচুর রিভার্স সুইপ অনুশীলন করেছেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা, ওয়ানডে সিরিজের আগে তাদের সেই চেষ্টা দেখা গেল পেসের বিপক্ষেও।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কার অনুশীলন শেষ হতেই মাঠে আসে বাংলাদেশ দল। শুরুতেই উইকেট সম্পর্কে ধারণা নিতে ছুটেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে।
সবার আগে নেটে পাঠানো হয় মেহেদী হাসান মিরাজ ও সানজামুল ইসলামকে। এরপর একে একে ব্যাটিং করেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, ‘বার্থডে বয়’ সাকিব আল হাসান।
থিসারার মতো অত বড় হলো না ছক্কাগুলো। কিন্তু সহজেই সীমানা পার করলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তামিম-মুশফিক জানিয়ে দিলেন বড় রানের চ্যালেঞ্জ নিতে তারা প্রস্তুত।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে শর্ট বল হতে পারে শ্রীলঙ্কার পেসারদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। সুরঙ্গা লাকমল, লাহিরু কুমারাদের একের পর এক শর্ট বল করে যেতে দেখা গেল। স্পিনাররা কাজ করলেন স্পট বোলিং নিয়ে।
বাংলাদেশের বোলারদের অনুশীলনের বড় একটা অংশ জুড়ে ছিল স্পট বোলিং অনুশীলন। বিশেষ করে ডেথ ওভারের জন্য মাশরাফি, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমানরা ইয়র্কার লেংথে প্রচুর বল করলেন। এর আগে এই উইকেটে তাদের ঠিক কোন লেংথে বল করতে হবে সেটা বুঝিয়ে দিলেন কোর্টনি ওয়ালশ।
বাংলাদেশ অনুশীলন শেষ করে ফিল্ডিং দিয়ে। এই সময়েই কলম্বো টেস্টের পর প্রথমবারের মতো কিপিং গ্লাভস হাতে নেন মুশফিক। সিঙ্গেলস ঠেকানো দিয়ে শুরু, শেষ সীমানায় ক্যাচ নেওয়া দিয়ে। মাঝে কিছুক্ষণ ধরতে হয়েছে বুলেট গতির ক্যাচ।
কলম্বো টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশ দলের শরীরি ভাষায় এসেছে পরিবর্তন। অধিনায়ক মাশরাফির বিশ্বাস, সেটা অটুট থাকবে পুরো সফরেই। দল আছে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। প্রথম ওয়ানডেতে অতিথিদের জন্য এটাই হতে পারে সবচেয়ে বড় পুঁজি।