ফারুকীর খুনিদের গ্রেপ্তারে ‘আল্টিমেটাম’

ইসলামী ফ্রন্টের নেতা ও টেলিভিশনে ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক নুরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে তার দলের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্রসেনা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2014, 09:48 AM
Updated : 29 August 2014, 09:51 AM

ওই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রসেনার নেতারা এই ঘোষণা দেন।

ছাত্র সেনার চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি আবু আযম বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”

বুধবার রাতে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় ঢুকে গলা কেটে ফারুকীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের এই নেতা ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। হাই কোর্ট মাজার মসজিদের খতিবের দায়িত্বও পালন করে আসছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইসলামী ফ্রন্ট, ছাত্রসেনা ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতাকর্মীরা সকাল ১১টার দিকে বন্দরনগরীর জামালখান প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে থাকেন।

এক পর্যায়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী জামালখান থেকে চেরাগী পাহাড় পর্যন্ত সড়কের পাশে বেরিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় ওই এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়।

সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের হাতে এ সময় লাঠিসোটাও দেখা যায়।

সমাবেশ চলাকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আহলে সুন্নাতের নেতারা।

সংগঠনের মহাসচিব মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার আগামী ২ সেপ্টেম্বর বিকালে লালদীঘি মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন। ওইদিন আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

বখতেয়ার বলেন, “নুরুল ইসলাম ফারুকী গণমাধ্যমে সুন্নীজনতার পক্ষে ইসলামের শান্তির কথা বলতেন। তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে সুফীবাদের ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করতেন।

“বাংলাদেশের একটি গোষ্ঠী মাজারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। মাজারকেন্দ্রিক ঐতিহ্যকে উচ্ছেদের চেষ্টা হয়েছে। সুন্নিরা ঐতিহ্য ফিরে পেলে জঙ্গিবাদ এগিয়ে যেতে পারবে না। এ কারণে জঙ্গিরা আলেম-ওলামাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছে।”

ফারুকীহত্যা ‘জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানের প্রয়াস’- এমন মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরও সুন্নী আলেমকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সরকারকে খুনীদের খুঁজে বের করতে হবে।

হত্যাকাণ্ডের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাতে নিহতের বাড়ির কাছে গ্রিন রোডে বিক্ষোভ করে ইসলামী ফ্রন্ট ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের নেতা-কর্মীরা। চট্টগ্রামে বিক্ষোভ থেকে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়।

ভাংচুরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মোছাহেব উদ্দিন বলেন, “বিশৃঙ্খলা আহলে সুন্নাতের নীতি নয়, কিছু দুষ্কৃতকারী শান্তিপুর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিশৃঙ্খলা করেছে। এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।”

অন্যদের মধ্যে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক এম এ মতিন, মুফতি ওবায়দুল হক নঈমী, আল্লামা এম এ মান্নান, মাওলানা আবুল কাশেম নূরী, গাউছিয়া কমিটির সভাপতি পেয়ার মোহাম্মদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে জামালখান থেকে চেরাগী পাহাড় এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সমাবেশ বা বিক্ষোভে তাদের বাধা দিতে দেখা যায়নি।