ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তৈরি প্রতিবেদনে কক্সবাজারের টেকনাফের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি ও তার আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি নাম এসেছে স্থানীয় সাংবাদিকদেরও।
Published : 10 May 2014, 10:14 PM
গত জানুয়ারিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তৈরি ‘মায়ানমার হতে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য চোরাচালান হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ ও এর সাথে জড়িতদের সম্পর্কে বিশেষ প্রতিবেদন’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে তৈরি তালিকায় দেশে বর্তমানে এক হাজার ২০০ জনের বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে । দুই বছর আগের তালিকায় ছিল এই সংখ্যা ছিল ৫৫৪ জন।
গত ২৩ জানুয়ারি অধিদপ্তরের অপারেশন অধিশাখার প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।
ওই প্রতিবেদনে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে নাম এসেছে ৫ জন সাংবাদিকের। যাদের প্রত্যেকেই জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক।
ওই তালিকায় নাম এসেছে দৈনিক জনকণ্ঠের মহেশখালী প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাকের, যিনি একইসঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণ এবং কক্সবাজার নিউজ ডটকমের প্রতিনিধি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "আব্দুর রাজ্জাক টেকনাফ থেকে নিজে ইয়াবা বহন করে নিয়ে আসে ও পাইকারি বিক্রি করে/ নিজে সেবন করে।"
প্রতিবেদনে নাম থাকার বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কিছুদিন আগে ওই তালিকার কথা জানতে পেরেছি। গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমার নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি, প্রমাণ করতে পারলে আমি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেব।”
“আপনারাও পারলে তদন্ত করেন। আমার মেডিকেল টেস্ট করেন। আমার অপরাধ আমি সত্য লিখি। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে আমি ৫ মিনিটের জন্য টেকনাফ গিয়েছি, তবে শাস্তি মাথা পেতে নেব।”
প্রতিবেদনে কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক জিয়াউল করিম জিয়ার নামও এসেছে। টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবুল আলীর নাম এসেছে প্রতিবেদনে। যিনি আজকের কক্সবাজার বার্তার টেকনাফ প্রতিনিধি।
আবুল আলী ও জিয়াউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া তালিকায় নাম এসেছে দৈনিক কালের কণ্ঠের টেকনাফ প্রতিনিধি জাবেদ ইকবাল চৌধুরীর, যিনি একই সঙ্গে চ্যানেল নাইন- এর কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “২০০৯ সালে আমি ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করি।এ কারণে অনেকে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে থাকতে পারে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে আমার ব্যাপারে জানতে পারেন।
“তালিকায় আমার নাম আসার পরে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা হাসছে। আমি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের শত্রু। আর নাম এসেছে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে। এটা দু:খজনক। জাবেদ নামে অনেকেই থাকতে পারেন। সে দায় তো আমার না। আমি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, এসএসআই, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।”
কক্সবাজারের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক সৈকতের নিজস্ব প্রতিবেদক নুরুল হকের নামও এসেছে ওই প্রতিবেদনে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। সব সময় সচেতন হয়ে চলার চেষ্টা করি। ওই প্রতিবেদনে অনেক নিরীহ লোকের নাম এসেছে। ষড়যন্ত্রকারী কেউ নাম দিয়ে দিয়েছে।
“কয়েকদিন আগে ওই প্রতিবেদনের কথা শুনেছি। এটুকু বলতে পারি, আমি অবৈধ কিছু করি না। ”