যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডে উদ্বেগ জানিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণের প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
Published : 17 Dec 2013, 10:37 PM
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সোমবার প্রস্তাব পাসের পর বাংলাদেশে মঙ্গলবার দিনভর সমালোচনার মধ্যে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী এক মশাল মিছিল থেকে এ দাবি জানানো হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিছিলটি টিএসসির রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপনকারী জামায়াত নেতা শের আকবর খান, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে রাজনৈতিক নেতা ইমরান খান, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খানের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।
যুদ্ধকালীন গণহত্যায় পাকিস্তানি বহিনীর অন্যতম দোসর কাদের মোল্লাকে ‘ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের’ একনিষ্ঠ সমর্থক উল্লেখ করে তার মৃত্যুদণ্ডে উদ্বেগ জানিয়ে প্রস্তাব পাস হয় দেশটির জাতীয় পরিষদে।
পাকিস্তানের তেহরিক-ই ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খান কাদের মোল্লাকে ‘নির্দোষ’ বলে মনে করেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সব পাকিস্তানিই এই মৃত্যুতে মর্মাহত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস হওয়ার মাধ্যমে জামায়াতের পাকিস্তানি আনুগত্য আরেকবার প্রমাণিত হল।
“যেখানে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রতি নীতি ও ভূমিকার জন্য তাদের ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করা উচিত, সেখানে তারা এই প্রস্তাব পাস করে ঘৃণা আরো উস্কে দিয়েছে।”
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের পদক্ষেপকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মানবেন্দ্র।
“একটি স্বাধীন দেশের বিচারের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার অন্য কোনো রাষ্ট্রে অধিকার নেই। পাকিস্তান শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত, পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে অনতিবিলম্বে দেশ থেকে বহিষ্কার করা।”
পাকিস্তানের পদক্ষেপের পর মঙ্গলবার দেশটির হাইকমিশনারকে ডেকে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে পাকিস্তানের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।