হানিফ মৃধার লাশ নিলেন ভাই

আশকোনায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর মারা যাওয়া আব্দুল হানিফ মৃধার লাশ তার ছোট ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2017, 03:16 PM
Updated : 21 March 2017, 03:26 PM

আব্দুল হালিম মৃধা মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে লাশটি গ্রহণ করে বরগুনায় তাদের গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন।

গত ‍শুক্রবার আশকোনায় র‌্যাবের ব্যারাকে আত্মঘাতী জঙ্গির হামলার পর ওই এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তি হিসেবে হানিফ মৃধাকে (৩৭) আটকের কথা জানায় র‌্যাব। আটকের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাসপাতালে পাঠানো হলে তার মৃত্যু হয়।

এই মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হানিফকে নারায়ণগঞ্জের কাচপুর এলাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় জিডিও করেন।

পরিবার এই দাবি তোলার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিষয়টির ব্যাখ্যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চেয়েছে বিএনপি। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানও এই প্রশ্নের মীমাংসা করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। 

হালিম মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, তার ভাই পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার নামে কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরিও ছিল না।

তিনি বলেন, “তুরাগ পরিবহনের তিনটি বাস ছিল ভাইয়ের।”

ঢাকার রায়েরবাগের শাহ আলী গলির একটি বাড়িতে থাকতেন হানিফ। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী লাইলী বেগম বরগুনার আমতলীতে তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন। ছোট বউ কুলসুম বেগম ও দুই মেয়েকে নিয়ে রায়েরবাগে থাকতেন হানিফ।

হালিম বলেন, ২৭ মার্চ তার ভাই বরিশালে চরমোনাই পীরের ওরস থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। তিনি ও তাদের গ্রামের অন্তত ৩০ জন ওই ওরসে গিয়েছিলেন।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, বরিশাল থেকে আসা লঞ্চ থেকে নারায়ণগঞ্জের কাচপুরে নেমে বন্ধু সোহেল হোসেন মন্টুকে নিয়ে নিজের গাড়িতে ওঠার পরপরই তাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল।

এরপর কোনো খোঁজ না পেয়ে গত ৪ মার্চ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রি করেন হালিম।

গত শনিবার ঢাকা মেডিকেল মর্গে লাশ যাওয়ার পর হানিফের খবর মেলে। হানিফ শুক্রবার মারা গেলেও সেদিন সে বিষয়ে কিছু জানায়নি র‌্যাব। একদিন বাদে লাশ পাঠানো হয়েছিল ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।

বিমানবন্দর থানার ওসি নুরে ই আযম বলেন, হানিফের মৃত্যু ঘটনায় র‌্যাবের এক সদস্য বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।

এদিকে সোহেলের সন্ধান না পেয়ে তার উদ্বিগ্ন স্বজনরা সোমবার র‌্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। র‌্যাব এই যুবকের সন্ধান বের করতে সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছে।

সোহেলের বাড়িও বরগুনায়, তিনি থাকতেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে। তিনি আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী।