আশকোনায় হানিফ মৃধার মৃত্যুর ব্যাখ্যা কী: ফখরুল

আশকোনায় আত্মঘাতী হামলার পর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার যুবকের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2017, 11:26 AM
Updated : 20 March 2017, 11:26 AM

গত শুক্রবার ব্যারাকে আত্মঘাতী হামলার পর গ্রেপ্তার আব্দুল হানিফ মৃধা অসুস্থ হয়ে মারা যান বলে র‌্যাবের দাবি। অন্যদিকে হানিফের পরিবারের দাবি, গত মাসে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেওয়া হয়েছিল।

ফখরুল সোমবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বলেন, “আমি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। কোনটি সত্য? র‌্যাবের ব্যাখ্যা সত্য, না কি তার পরিবারের সদস্যের ব্যাখ্যা সত্য।

“যদি পরিবারের কথা সত্য হয়ে থাকে, আমরা কোন দেশে বাস করছি? আমি দাবি করছি, সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিত তথ্য জানাতে হবে।”

হানিফের সন্ধান চেয়ে গত ৪ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন তার ভাই আব্দুল হালিম মৃধা।

তাতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হানিফ মৃধা ও তার এক বন্ধুকে নারায়ণগঞ্জের কাচপুর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়।

গত শনিবার বিকালে হানিফের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গেলে তার মৃত্যুর খবরটি জানাজানি হয়। তার আগের দিন র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে কিছু জানায়নি।

লাশ মর্গে যাওয়ার পর র‌্যাব জানায়, শুক্রবার আশকোনায় আত্মঘাতীর বিস্ফোরণ ঘটানোর পর বিকালে ওই এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে হানিফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে।

এদিকে হানিফ নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার যে জিডি করেছিল, তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান। 

হানিফের প্রসঙ্গটি তুলে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে জঙ্গিবাদ ব্যবহার করার অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

“এই সরকার একটা গভীর ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছে, সেই খেলা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাবে আমরা জানি না। বাংলাদেশকে আজ জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা শুরু হয়ে গেছে।”

সরকার জঙ্গিবাদকে বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার করেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “জঙ্গিবাদ নিয়ে খেলবেন না। এর সুষ্ঠু তদন্ত করুন। কোথায় এর মূল কারণ, সেটা বের করুন। কোথায় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে, এটা বের করতে হবে এবং এর সমাধান করতে হবে।”

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জোট শরিক এনপিপির আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে জনগণের প্রত্যাশা নিয়েও কথা বলেন।

“আমরা তিস্তা নদীর পানি চাই। আমরা ফারাক্কা বাঁধে যে সর্বনাশ হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমাদের সীমান্তে যেন অন্যায়ভাবে হত্যা করা না হয় এবং অন্যান্য যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলোর সমাধান করতে হবে।”

কিন্তু স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়, দেশের স্বার্থের বিপরীতে যায়, ভারতের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি না করতে সরকারকে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ গঠনের দাবি আবারও জানান বিএনপি মহাসচিব।

তাঁত শিল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরেন তিনি।

“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁত শিল্প শেখ মুজিবুর রহমান চলে যাওয়ার পরে ধ্বংস হয়ে গেছে। ঐতিহাসিক সত্যটা কী? শহীদ জিয়া্উর রহমান তাঁত শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। তাঁত বোর্ড গঠন করেছিলেন, সেই বোর্ড গঠন করার মধ্য দিয়ে পববর্তীকালে তাঁত শিল্পে অনেক বেশি উন্নয়ন হয়েছে।”

এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, খোন্দকার লুৎফর রহমান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ-ভাসানীর আজাহারুল ইসলাম চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন বক্তব্য রাখেন।