কেরালায় আদানি গ্রুপের বন্দর নির্মাণ ঘিরে সংঘর্ষে আহত ৮০

গ্রামবাসীদের আন্দোলনের কারণে তিনমাসের বেশি সময় ধরে বন্দরের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে।

রয়টার্স
Published : 28 Nov 2022, 05:06 PM
Updated : 28 Nov 2022, 05:06 PM

ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালার কোচিতে আদানি গ্রুপের বন্দর নির্মাণ কাজ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভরত গ্রামবাসীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৮০ জন আহত হয়েছেন।

৯০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য ওই বন্দরটির নির্মাণ কাজ স্থগিতের দাবি নিয়ে ওই এলাকার গ্রামবাসীরা গত কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন।

ওই গ্রামবাসীদের অধিকাংশই খ্রিস্টান জেলে। তাদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে আদানির বন্দর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে উপকূলে ভাঙন আরম্ভ হয়েছে এবং তাদের জীবন-জীবিকা ব্যাহত হচ্ছে৷

সেখানে প্রায় ৫৬ হাজার মৎস্যজীবি সম্প্রদায়ের মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল। তাই তারা সরকারের কাছে অবিলম্বে বন্দর নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।

গ্রামবাসীদের আন্দোলনের কারণে তিনমাসের বেশি সময় ধরে বন্দরের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। আন্দোলনকারীরা ১২শ বর্গক্ষেত্রের একটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করে বন্দরের প্রবেশ পথ আটকে দিয়েছে।

গ্রামবাসীদের বাধা ও বিক্ষোভ গৌতম আদানির জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সেখানে একটি বন্দরসহ লজিস্টিক কোম্পানি নির্মাণের জন্য ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করছে৷

আদানি গ্রুপ তাদের কাজ বন্ধ করে দেয়ার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্ত হয় এবং আদালত থেকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়।

আদালতের নির্দেশের পর নির্মাণ কাজ শুরু করতে আদানি গ্রুপ নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত যানবাহন বন্দরে প্রবেশ করাতে গেলে আন্দোনকারীরা সেগুলো আটকে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে।

যার জেরে রোববার রাতে স্থানীয় একজন ক্যাথলিক যাজকের নেতৃত্বে কয়েকশ আন্দোলনকারী থানা ঘেরাও করেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয় এবং তারা পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। স্থানীয় টেলিভিশনে ভাংচুরের ভিডিও দেখানো হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের নেতা যাজক জোসেফ জনসন বলেন, সংঘর্ষে অন্তত ৪৬ বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, স্থানীয় জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এম আর অজিত কুমার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তাদের ৩৬ পুলিশ সদস্য ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রোববার রাতের সংঘর্ষের পর ভিজিনজাম এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এজন্য সেখান অতিরিক্ত ছয়শ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতে দক্ষিণপ্রান্তে নির্মাণাধীন এই বন্দরের মাধ্যমে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি সমুদ্রপথে দক্ষিণ-পশ্চিমের লাভজনক ব্যবসার রুট কব্জা করে বিশ্বব্যাপী ব্যবসাকে তার আরও হাতের নাগালের মধ্যে আনতে চান৷