৩৮ বছর পর তুষার-সমাধিতে মিলল ভারতীয় সেনার মরদেহ

ভারতীয় জওয়ান চন্দ্রশেখর হারবোলা ১৯৮৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন মেঘদূত’ পরিচালনা করতে সিয়াচেনে গিয়েছিলেন। সেসময় তুষারধসে তিনিসহ তার দলের সবাই মারা পড়েন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 11:51 AM
Updated : 16 August 2022, 11:51 AM

শুনতে অবাক লাগলেও সত্য, ৩৮ বছর আগে হিমালয়ে নিখোঁজ হওয়া এক ভারতীয় সেনা জওয়ানের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত সিয়াচেন হিমবাহের বরফের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন চন্দ্রেশখর হরবোলা নামের এই জওয়ান।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিয়াচেন সংঘর্ষে জড়িত ১৯ কুমায়ুন রেজিমেন্টের ল্যান্স নায়েক ছিলেন তিনি।

বিবিসি জানায়, হরবোলা ও তার ১৯ সহকর্মী ১৯৮৪ সালে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী সিয়াচেনে টহল অভিযানের সময় তুষারধসে চাপা পড়েন।

তাদের মধ্যে ১৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও পাঁচ জন নিখোঁজ ছিলেন।

সিয়াচেন হিমবাহে ঝড় এবং তুষারধসে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশেরই সেনাদের প্রাণহানি ঘটে থাকে।

চন্দ্রেশখর হরবোলার মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া সামরিক ইউনিট আরেকটি লাশও পেয়েছে। তবে সেই লাশের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভারতীয় সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে উত্তরাখণ্ডের হলদিয়ানিতে চন্দ্রশেখর হরবোলার পরিবারকে তার লাশ উদ্ধারের খবর দেওয়া হয়েছে। তার দেহ শিগগিরিই হলদিয়ানিতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দাহ করা হবে।

চন্দ্রশেখর হরবোলা ১৯৭১ সালে কুমায়ুন রেজিমেন্টে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে সিয়াচেনের জন্য যুদ্ধ হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। ভারত এ মিশনের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন মেঘদূত’। এই অভিযানে হরবোলার কুমায়ুন রেজিমেন্টও ছিল।

কয়েক দশক পর ভারতীয় সেনার লাশ উদ্ধারের এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। তুকারাম ভি পাতিল নামের এক সেনার লাশও নিখোঁজ হওয়ার ২১ বছর পর ২০১৪ সালে উদ্ধার করেছিল একটি টহল ইউনিট। তিনিও সিয়াচেন হিমবাহে তুষারধসে চাপা পড়েছিলেন।

সিয়াচেন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ওই এলাকাকে অ-সামরিক জোন করার জন্য অনেকবার আলোচনা হলেও সফলতা আসেনি।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের সেনারা সিয়াচেনে নিজেদের দাবি করা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৮৪ সালে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে জড়ায়।

এর চার দশক পর এখনও উভয় দেশের সেনারাই সেই দুর্গম এলাকায় অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০১২ সালে সিয়াচেন হিমবাহের কাছে এক তুষারধসে পাকিস্তানের অন্তত ১২৯ সেনা নিহত হয়।

ওই ঘটনার পর সিয়াচেন থেকে ভারত ও পাকিস্তানের সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ডাক ওঠে। কিন্তু দুই দেশই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।

২০১৬ সালে এক তুষারধসে অন্তত ১০ ভারতীয় সেনা জওয়ান নিহত হয়। এছাড়া, ২০১৯ সালেও একই ধরনের পরিস্থিতিতে মারা যায় আরও চার সেনা।