মার্কিন চাপ সত্ত্বেও ইরানের দুটি যুদ্ধজাহাজকে নোঙরের অনুমতি দিল ব্রাজিল

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ব্রাসিলিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দাঁড় করাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ইরানি যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অস্বস্তি বেশ বাড়িয়েই দেবে বলে মনে হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2023, 07:42 AM
Updated : 28 Feb 2023, 07:42 AM

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভার সরকারের অনুমতি পেয়ে রিও দে জেনেইরোতে নোঙর করেছে ইরানের দুটি যুদ্ধজাহাজ।

জাহাজদুটিকে নোঙরের অনুমতি না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক চাপ ছিল; তা উপেক্ষা করেই লুলার প্রশাসন আইআরআএস মাকরান ও আইআরআইএস দেনাকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দেয়।

রোববার সকালেই দুটি যুদ্ধজাহাজ বন্দরে পৌঁছায় বলে রিও-র বন্দর কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

চলতি মাসের প্রথমদিকে সংবাদমাধ্যমটি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতে লুলার ওয়াশিংটন যাওয়া উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতেই জানুয়ারির শেষদিকে ইরানের এ দুটি নৌযানের বন্দরে ভেড়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল ব্রাজিল।

লুলার সফর শেষ হয়ে যাওয়ার যুদ্ধজাহাজটি দুটিকে ব্রাজিলে নোঙরের অনুমতি দেওয়া হয়।

ব্রাজিলের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল কার্লোস এদুয়ার্দো হোরতা আইআরআএস মাকরান ও আইআরআইএস দেনাকে ফেব্রুয়ারির ২৬ থেকে মার্চের ৪ তারিখের মধ্যে রিওর বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দিয়েছেন বলে ২৩ ফেব্রুয়ারির এক সরকারি আদেশে দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স ব্রাজিলে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কাছ থেকে সাড়া পায়নি।

কোনো দেশের দূতাবাসের অনুরোধ বিবেচনায় নেওয়ার পর ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই কেবল ব্রাজিলের নৌবাহিনী বিদেশি কোনো নৌযানকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দিতে পারে, বলছে রয়টার্স।

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটন ব্রাসিলিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দাঁড় করাতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে ইরানি যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের অস্বস্তি বেশ বাড়িয়েই দেবে বলে মনে হচ্ছে।

এ মাসের মাঝামাঝি এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এলিজাবেথ বাগলে জাহাজদুটিকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি না দিতে ব্রাজিলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন।

“অতীতে এই জাহাজগুলো অবৈধ বাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দিয়েছে, এগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাও আছে। ব্রাজিল একটি সার্বভৌম দেশ, কিন্তু আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই জাহাজগুলোকে বিশ্বের কোথাও ভেড়ার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়,” বলেছিলেন তিনি।

আগের মেয়াদে লুলা ইরানের সঙ্গে ব্রাজিলের সম্পর্ক জোরদারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতায় ২০১০ সালে তিনি তেহরানে উড়ে গিয়ে তখনকার প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।