উত্তর কোরিয়ায় তৈরি চোখের কৃত্রিম পাপড়ি চীনে পক্রিয়াকরণ এবং প্যাকেজিংয়ের পর রপ্তানি হয় পশ্চিমা দেশগুলোসহ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারেও।
Published : 04 Feb 2024, 10:37 PM
‘মেইড ইন চায়না’ লেখা থাকলেও আসলে তৈরি উত্তর কোরিয়ায়। বিশ্বব্যাপী বিউটি স্টোরগুলোতে এই নামে বিক্রি হচ্ছে চোখের কৃত্রিম পাপড়ি (আইল্যাশ)। এই পাপড়ি বিক্রি করে লাখ লাখ ডলার আয় করছে উত্তর কোরিয়া।
কৃত্রিম পাপড়িগুলোর প্রক্রিয়াকরণ এবং প্যাকেজিং চীনে খোলাখুলিভাবেই চলছে। উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার দেশ চীন।
চীনের সহায়তায় এই ব্যবসা করে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন তার দেশের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর পথ পেয়ে যাচ্ছেন এবং এটি তাদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রারও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠেছে।
আইল্যাশ কোম্পানির ১৫ জনসহ বাণিজ্য বিষয়ক আইনজীবী এবং উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মিলিয়ে ২০ জনের সঙ্গে কথা বলেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তারা কি পদ্ধতিতে এই কাজ চলছে তা বর্ণনা করে বলেছেন, চীন-ভিত্তিক ফার্মগুলো উত্তর কোরিয়া থেকে আধা-সমাপ্ত পণ্য আমদানি করে। পরে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হয় এবং প্যাকেজ করা হয় চীনের তৈরি হিসাবে।
পুরোপুরি প্রস্তুতকৃত এইসব কৃত্রিম পাপড়ি তারপর রপ্তানি হয় পশ্চিমা দেশগুলোসহ জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারেও। এই ব্যবসায় সরাসরি জড়িত কয়েকটি কোম্পানিতে কাজ করা আটজন জানিয়েছেন এমন কথা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেছেন,উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই পরচুলা এবং আইল্যাশ জাতীয় পণ্যগুলোর প্রধান একটি রপ্তানিকারক দেশ। তবে কোভিড মহামারীর সময় রফতানি কমে গিয়েছিল দেশটি সীমান্ত কড়াকড়িভাবে বন্ধ রাখার কারণে।
কাস্টমস নথি এবং আইল্যাশ ব্যবসায় জড়িত চারজনের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে চীনের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার তৈরি আইল্যাশ বাণিজ্য ফের শুরু হয়।
চীনা কাস্টমসের তথ্যে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে সীমান্ত পুনরায় খোলার পর চীনে উত্তর কোরিয়ার রপ্তানির পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। উত্তর কোরিয়ার ঘোষিত প্রায় সমস্ত রপ্তানি পণ্যের গন্তব্যই চীন।
গত বছর চীনে উত্তর কোরিয়ার ঘোষিত রপ্তানির প্রায় ৬০ শতাংশ ছিল পরচুলা ও চোখের কৃত্রিম পাপড়ি। উত্তর কোরিয়া ২০২৩ সালে চীনে ১,৬৮০ টন আইল্যাশ, দাড়ি এবং পরচুলা রপ্তানি করেছে, যার মূল্য প্রায় ১৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
আর ২০১৯ সালে যখন দাম কম ছিল, তখন উত্তর কোরিয়া এইসব পন্য রপ্তানি করেছিল ১,৮২৯ টন, যার মূল্য ছিল তিন কোটি ১১০ লাখ ডলার।