ইরান পরিস্থিতি ‘গুরুতর’, নিহত ৩শ’র বেশি: জাতিসংঘ

ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনাভিযান দেশটির গুরুতর পরিস্থিতিরই আলামত, বলেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।

রয়টার্স
Published : 22 Nov 2022, 06:30 PM
Updated : 22 Nov 2022, 06:30 PM

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, ইরানের পরিস্থিতি খুবই ‘গুরুতর’। বিক্ষোভকারীদের ওপর কর্তৃপক্ষের কঠোর দমনাভিযানের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে গত দু’মাসের বিক্ষোভে ৩০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

জেনেভায় মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তুর্ক আরও বলেন, “গত সপ্তাহে দুই শিশুর মৃত্যুসহ ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনাভিযান দেশটির গুরুতর পরিস্থিতিকে সামনে নিয়ে এসেছে।”

বিবিসি জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে ইরানের এই গুরুতর বিপজ্জনক পরিস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর না করার জন্য ইরান কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করা হয়েছে।

মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র লিজ থ্রসেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার কারণে বিক্ষোভকারীর মৃত্যু বাড়ছে।

তিনি নিহতের সংখ্যা ৩শ’র বেশি বলে উল্লেখ করেন এবং মৃতদেহগুলো আটকে রাখা হচ্ছে- এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা চুপ না থাকলে কিংবা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত মৃতদেহগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইরানে গত ৯ সপ্তাহে বিক্ষোভে গুলিতে নিহত কয়েকজনের পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা অভিযোগ করেছেন যে, তারা মৃতদেহ মর্গ থেকে আনতে গেলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন গণমাধ্যমকে একথা বলার জন্য যে, নিহতরা পথচারী ছিল কিংবা মিলিশিয়া ছিল, যারা দাঙ্গাকারীদের হাতে মারা গেছে।

পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গত সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া ২২ বছর বয়সি কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার পর থেকেই ইরান বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে আছে। হিজাব বিরোধী এই বিক্ষোভ সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ইরানের বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪০টি শিশু রয়েছে। দেশজুড়ে ৩১ টি প্রদেশের ২৫ টিতেই এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

ওএইচসিএইচআরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স বিশেষত, ইরানের কুর্দি নগরীগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে সেখানে ৪০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, গত মাসে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পুলিশসহ ৪৬ জন বিক্ষোভে নিহত হয়েছে। তবে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে বেশি হওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।