“যুদ্ধে পরাজিত একজন নেতার থাকার চেয়ে চলে যাওয়া ভালো,” বলেন এক বিক্ষোভকারী।
Published : 20 Jan 2024, 03:43 PM
আজারবাইজানের আক্রমণের মুখে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্তৃপক্ষ অস্ত্রসমর্পণ করতে বাধ্য হওয়ার পর আর্মেনিয়া সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বিক্ষুব্ধ নাগরিকরা।
কারাবাখের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিতে তাদের সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। তারা সরকারের এ ‘ব্যর্থতার’ নিন্দা করেছেন।
বুধবার আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানের কেন্দ্রস্থল রিপাবলিক স্কয়ারে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তারা। তাদের অনেকে প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগ দাবি করেন।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর শুরু হওয়া যুদ্ধের মধ্যে আর্মেনিয়া কারবাখের বিশাল অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল, কিন্তু ২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের আরেক যুদ্ধে আজারবাইজান অধিকাংশ অঞ্চল পুনরুদ্ধার করে; রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সে যুদ্ধের অবসান হয়। তখনও আর্মেনিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন পাশিনিয়ান। আর এবার নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনীয় কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটল।
বিক্ষোভকারী প্রকৌশলী হারুত (৩২) বলেন, “আমরা আশা করি সে পদত্যাগ করবে। যুদ্ধে পরাজিত একজন নেতার থাকার চেয়ে চলে যাওয়া ভালো।”
তিনি বলেন, আর্মেনিয়ারা এতোদিন ধরে কারাবাখের জন্য লড়াই করার পর এ পরাজয় অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
“এর জন্য আমরা ৩০ বছর ধরে লড়াই করে আসছি, ৩০ বছরেরও বেশি আর এখন সবকিছু অর্থহীন হয়ে গেল।”
বিরোধীদলগুলোর রাজনীতিকরা একটি মঞ্চ থেকে পাশিনিয়ানের নিন্দা করে বক্তব্য দেন। ২০১৮ এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেওয়া পাশিনিয়ানও ওই সময় এই স্কয়ারের দাঁড়িয়েই বিভিন্ন বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেখানে জড়ো হওয়া অনেকেই স্লোগান দেন- ‘নিকোল একজন বিশ্বাসঘাতক’।
বিক্ষোভকারীদের অনেকেই নাগোরনো-কারাবাখের পতাকা দোলান এবং একটি অংশ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান। অন্যরা রিপাবলিক স্কয়ারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর লক্ষ্য করে বোতল ও ঢিল ছুড়ে মারেন।
এ সময় স্কয়ারের চারপাশে সরকারি দপ্তরগুলো ঘিরে প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে রেখেছিল দাঙ্গা পুলিশ। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যে স্কয়ারের কাছে কয়েকটি সামরিক ট্রাকও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বুধবার আজারবাইজান জানায়, নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ায় তারা তাদের আক্রমণ বন্ধ করেছে। এই অস্ত্রবিরতির শর্তগুলো থেকে ধারণা পাওয়া গেছে, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি অবশেষে বাকুর নিয়ন্ত্রণেই যাচ্ছে।
খ্রিস্টান প্রধান আর্মেনীয়রা নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের ওপর ঐতিহাসিক অধিকারের দাবি জানিয়ে আসছে। অন্যদিকে মুসলিম প্রধান আজারবাইজান ওই অঞ্চলের সঙ্গে তাদেরও ঐতিহাসিক যোগ থাকার দাবি করে আসছে। সংবাদ সূত্র: রয়টার্স
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)