শ্রীলংকাকে দেওয়া ঋণের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ দুই বছরের জন্য স্থগিত করা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে দেশটির ২৯০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার চেষ্টায় সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পর্যালোচনা করা একটি চিঠিতে এমন কথা বলা হয়েছে।
চিঠিটিতে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (এক্সিম) ব্যাংক বলেছে, শ্রীলংকার অনুরোধের ভিত্তিতে বকেয়া ঋণের ক্ষেত্রে ২০২২ এবং ২০২৩ সালের সময়সীমা বাড়াবে তারা।
গত বছর মার্চে আইএমএফ এর প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত শ্রীলংকাকে ২৮৩ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। এই ঋণ শ্রীলংকার মোট ঋণের শতকরা ৩ দশমিক ৫ ভাগ।
চিঠিতে ব্যাংকটি বলেছে, উল্লিখিত সময়সীমার জন্য ব্যাংক থেকে দেওয়া ঋণের মূল অর্থ এবং সুদ পরিশোধ করতে হবে না। এই সময়ের মধ্যে আমরা আপনাদের সঙ্গে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে চাই।”
চীনের ঋণদাতাদের কাছে শ্রীলংকার ৭৪০ কোটি ডলার ঋণ আছে। সরকারি পর্যায়ে দেশটি বিদেশি যে ঋণ নিয়েছে, এই অর্থ তার শতকরা প্রায় এক পঞ্চমাংশ। গত বছরের শেষ নাগাদ এ হিসাব দিয়েছে, চায়না আফ্রিকা রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, তারল্য সংকট থেকে স্বস্তি পেতে আইএমএফ এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (এফএফএফ) জন্য শ্রীলংকা যে আবেদন করেছে, তার জন্য ব্যাংকটি সহায়তা করবে। শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান পি. নন্দলাল বীরাসিংহে মঙ্গলবার বলেছেন, চীন এবং জাপানের কাছ থেকে আশ্বাস কামনা করে শ্রীলংকা।
শ্রীলংকার জনসংখ্যা দুই কোটি ২০ লাখ। সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে দেশটি। শ্রীলংকায় সবচেয়ে বেশি ঋণদাতা হচ্ছে, আঞ্চলিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন এবং ভারত।
এমাসের শুরুর দিকে ভারত আইএমএফ এর কাছে চিঠি লিখেছিল। তাতে ভারত জানিয়েছিল, আর্থিক খাত এবং ঋণ থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার জন্য শ্রীলংকাকে তারা সমর্থন করবে। কিন্তু আইএমএফ এর সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে শ্রীলংকার চীনেরও সমর্থন প্রয়োজন।
তবে চীনের সমর্থনই শ্রীলংকার গুরুত্বপূর্ণ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে আইএমএফ এর অনুমোদন পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে বলে মনে করেন না দেশটির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
তার মতে, শ্রীলংকার যে ঋণ প্রয়োজন তার তুলনায় চীনের সহায়তা খুবই নগন্য। এতে করে অবিলম্বে ২৯০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া শ্রীলংকার জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।