ভারতে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে ফ্লু

আক্র‍ান্তদের ক্রমাগত কাশি হচ্ছে, সঙ্গে জ্বর থাকছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2023, 04:51 PM
Updated : 4 March 2023, 04:51 PM

ভারতের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে গত দুইমাস ধরে অনেক মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘসময় ধরে অসুস্থ থাকছেন। কাশি ভালো হতেও অনেক সময় লেগে যাচ্ছে।

প্রায় দুই বছর ধরে কোভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে লড়াই করা দেশটির সাধারণ মানুষদের মনে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়া এই ইনফ্লুয়েঞ্জা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলে জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এর রোগের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে ক্রমাগত কাশি, সঙ্গে জ্বর। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা এবং শরীরে এসব উপসর্গ থেকে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এজন্য এইচ৩এন২ ভাইরাসের একটি উপধরণ কে দায়ী করেছে। অনেক মানুষকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছে।

গত দুই বা তিন মাসে এই ভাইরাসটি ভারতজুড়ে বিস্তৃত আকারে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্থানীয় একটি হাসপাতালের চিকিৎসক অনুরাগ মেহোত্রা বলেন, ‘‘আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ হতে সময় লাগছে। রোগীদের দেহে কঠোর উপসর্গ দেখা দেয় এবং দীর্ঘদিন ধরে রোগের উপসর্গ থাকে। এমনকি রোগী সুস্থ হয়ে উঠার পরও অনেকদিন পর্যন্ত রোগের উপসর্গ তার শরীরে থেকে যায়।”

ইনফ্লুয়েঞ্জার অন্যান্য উপধরণের চাইতে এইচ৩এন২ ধরণের কারণে হাসপাতালের ভর্তির সংখ্যাও বেশি বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার নতুন এই ধরণটি জীবনসংহারী নয় বলে জানিয়েছেন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ ডা. অনিতা রমেশ। বলেন, ‘‘প্রাণসংহারী না হলেও ফুসফুসের তীব্র সমস্যা নিয়ে আমার কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তাদের দেহে যেসব উপসর্গ দেখা গিয়েছিল সেগুলোর কয়েকটি কোভিডের সঙ্গে মিলে যায়। যদিও তাদের সবাই কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হয়েছিলেন।”

কেউ কেউ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে দ্রুত সুস্থ হতে ইচ্ছামত অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) থেকে সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হলেই অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এমনকি সংস্থাটি থেকে চিকিৎসকদেরও ব্যবস্থাপত্রে রোগীদের যথেচ্ছা অ্যান্টিবায়োটিক না দিয়ে বরং উপসর্গ দেখে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আইএমএ-র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘আমরা ইতিমধ্যে কোভিডের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন এবং আইভারমেকটিন এর ব্যাপক ব্যবহার দেখেছি। যা মানুষের প্রকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় প্রভাব ফেলেছে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের আগে সংক্রমণটি ব্যাকটেরিয়াজনিত নাকি ভাইরাসজনিত তা আগে নির্ণয় করা প্রয়োজন।”

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে নয়।