ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের চালান ইউক্রেইনে পৌঁছতে পারে।
Published : 28 Mar 2024, 02:26 PM
নেটোর কোনো দেশ নিয়ে রাশিয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তারা পোল্যান্ড, বাল্টিক দেশগুলো বা চেক রিপাবলিকে আক্রমণ করবে না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেইনে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান পাঠালে রুশ বাহিনীগুলো তা গুলি করে ভূপাতিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
বুধবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় রাতে দেশটির বিমান বাহিনীর পাইলটদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন এসব কথা বলেন; বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন প্রকাশিত ভাষণের অনুলিপি থেকে এমনটি জানা গেছে।
পুতিন বলেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো পূর্বে রাশিয়ার দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে, কিন্তু কোনো নেটো দেশে আক্রমণ চালানোর কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই।
তিনি বলেন, “এসব রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের কোনো আক্রমণাত্মক অভিপ্রায় নেই। আমরা আরও কিছু দেশে আক্রমণ করতে পারি এমন ধারণায় পোল্যান্ড, বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর বাসিন্দারা ও চেকরাও ভয়ে আছে, কিন্তু এসব সম্পূর্ণ বাজে কথা, অর্থহীন প্রলাপ।”
ইউক্রেইনকে অস্ত্র, অর্থ ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে অভিযোগ ক্রেমলিনের। তারা বলছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক সম্ভবত কখনোই এতো খারাপ ছিল না।
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেইনকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এফ-১৬ জঙ্গি বিমান সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, এসব বিমান ইউক্রেইনের পরিস্থিতি পাল্টাতে পারবে না।
“যদি তারা এফ-১৬ সরবরাহ করে আর তারা এ নিয়ে কথা বলছে, সম্ভবত পাইলটদেরও প্রশিক্ষণ দেবে; এগুলোতে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আজ যেমন আমরা ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও মাল্টিপল রকেট লঞ্চারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করছি তেমনি এসব আকাশযানগুলোও ধ্বংস করবো।”
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক অস্ত্র বহনও করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পুতিন বলেন, “তৃতীয় কোনো দেশের বিমানক্ষেত্র থেকে যদি এগুলোকে ব্যবহার করা হয় তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের বৈধ লক্ষ্য হয়ে উঠবে, সেগুলো যেখানেই হোক না কেন।”
বুধবার ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের চালান ইউক্রেইনে পৌঁছতে পারে। তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন।
ইউক্রেইন দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বাত্মক এক যুদ্ধে লড়াই করছে। দেশটি অনেক দিন ধরেই পশ্চিমা দাতাদের কাছে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান চেয়ে আসছে। বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডস দেশটিকে এফ-১৬ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর নেটো জোটের অনেকগুলো দেশ ইউক্রেইনীয় পাইলটদের এসব যুদ্ধবিমান ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এর ফলে ১৯৬২ সালের কিউবা মিসাইল সংকটের পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সংকট সবচেয়ে গভীর পর্যায়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইসলামিক স্টেটই কনসার্ট হলে হামলা চালিয়েছে, স্বীকার করলেন পুতিন