ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ থেকে শুরু করে উত্তরাঞ্চলীয় খারকিভ, দক্ষিণাঞ্চলীয় ওদেসা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় জিতোমিরসহ বিভিন্ন শহরের লক্ষ্যস্থলগুলোতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
এসব হামলার পর বেশ কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে, খারকিভ ও ওদেসায় আবাসিক ভবন ও অবকাঠামোয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে; জানিয়েছে বিবিসি।
পূর্ব ইউক্রেইনের বাখমুতে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র স্থলযুদ্ধ চলার মধ্যেই এসব হামলা চালানো হল।
কিইভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানিয়েছেন, নগরীর দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে বিস্ফোরণের খবর পেয়ে সেখানে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। হামলার আগেই পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে কিইভের প্রায় ১৫ শতাংশ বাসিন্দার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কিইভ প্রতিনিধি স্থানীয় সময় সকাল প্রায় ৭টার দিকে ধারাবাহিক কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
ওদেসার গভর্নর মাক্সিম মারচেঙ্কো জানিয়েছেন, বন্দরনগরীটির একটি বিদ্যুৎ স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, এতে নগরীর বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
বেসামরিক এলাকায়ও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে কিন্তু কোনো হতাহতের খবর হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
খারকিভ অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান ওলেগ সিনেগুভব জানিয়েছেন, খারকিভ শহর ও অঞ্চলে ‘প্রায় ১৫টি’ ক্ষেপণাস্ত্র ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে’ ও আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে।
অন্যান্য যেসব শহরে হামলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় ভিয়েননিৎসা ও রিভনে এবং মধ্যাঞ্চলীয় নিপ্রো ও পোলতাভা উল্লেখযোগ্য।
রাশিয়ার বাহিনীগুলো দাবি করেছে, তারা বাখমুতের পূর্বাংশের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে; কিন্তু ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার তীব্র হামলা মোকাবেলা করে তাদের পিছুঁ হটিয়ে দিয়েছে।
রুশ বাহিনী বাখমুতের দখল নিতে কয়েকমাস ধরেই চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছে। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলার আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে বাখমুত আর উভয়পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইউক্রেইনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেছে, “শত্রুরা তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে আর বাখমুত শহরকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে কোনো বিরতির লক্ষণ দেখাচ্ছে না। আমাদের প্রতিরোধকারীরা বাখমুত ও আশপাশের এলাকাগুলোতে হামলা প্রতিহত করে চলেছে।”
গত গ্রীষ্মে বাখমুতে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে শহরটিতে ২০ থেকে ৩০ হাজার রুশ সেনা নিহত অথবা আহত হয়েছে বলে পশ্চিমা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। তবে তাদের এ দাবি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা যায়নি।
এক বছর আগে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করেছিল রুশ বাহিনী। তারপর থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা ও বেসামরিক হতাহত হয়েছে এবং লাখ লাখ ইউক্রেইনীয় শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: