ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৬২

পশ্চিম জাভায় উৎপত্তি হওয়া ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি ৭৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানী জাকার্তায়ও অনুভূত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2022, 09:20 AM
Updated : 21 Nov 2022, 09:20 AM

ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬২ জন হয়েছে, আহত হয়েছে আরও কয়েকশ মানুষ এবং ১৩ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিলের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম কম্পাসডটকম এবং দেতিক ডটকম।

তবে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা সংস্থার সর্বশেষ তথ্যে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৬২ উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার পশ্চিম জাভায় উৎপত্তি হওয়া ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি ৭৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানী জাকার্তায়ও অনুভূত হয়।

দেশটির জিওফিজিক্স এজেন্সি (বিএমকেজি) জানিয়েছে, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুড় শহরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীর ভূমিকম্পটির উৎপত্তি। এতে সুনামির কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যমে গভর্নর কামিল বলেছেন, ভূমিকম্পে ৩২৬ জন আহত হয়েছে।

তবে ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও অনেক বাসিন্দা আটকা পড়ে আছে বলে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে- এমনটিই আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা সংস্থা ভূমিকম্পে ২,২০০’র বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে।

একটি হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় কয়েকশ লোককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, নিউজ চ্যানেলটির ফুটেজে এমনটি দেখা গেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি জাকার্তায় কয়েক সেকেন্ড ধরে অনুভূত হয়েছে। এ সময় নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকার দপ্তরগুলো থেকে কিছু লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়।

জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা এক বিবৃতিতে জানায়, সিয়ানজুড় এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ও একটি মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত জানতে কর্মকর্তারা অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।

মেট্রোটিভি থেকে পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, সিয়ানজুড়ের বেশ কিছু ভবন প্রায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাইরে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন।

ভূমিকম্পের সময় সিয়ানজুড়ে উপস্থিত থাকা মুহলিস নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি ‘বিশাল কম্পন’ অনুভব করেন এবং তার দপ্তরের দেয়াল ও সিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লোকজন তাদের ঘরবাড়ি থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে আসে, কেউ অজ্ঞান হয়ে যায় এবং কিছু লোক বমি করতে থাকে।

“আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। আরেকটি ভূমিকম্প হতে পারে বলে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল,” মেট্রোটিভিকে বলে মুহলিস।

বিএমকেজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে পরবর্তী দুই ঘণ্টায় ২৫টি পরাঘাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারি বৃষ্টি হলে ভূমিধসের সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেছে তারা।

প্রায় ২৭ কোটি মানুষের দেশ ইন্দোনেশিয়া তথাকথিত ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলার’ (প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার) ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এ অঞ্চলটিতে ভূত্বকের কয়েকটি পৃথক টেকটোনিক প্লেট এসে মিলিত হওয়ায় এখানে ঘন ঘন ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতের মতো ঘটনা ঘটে।