প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পাকিস্তানে বিদ্যুৎ ফিরেছে। জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে সোমবার দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
এ নিয়ে গত তিন মাসে দ্বিতীয়বারের মত দেশজুড়ে ‘ব্লাকআউট’ দেখতে হলো পাকিস্তানকে। যা থেকে ‘শিক্ষা গ্রহণ করে’ এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী খুররাম দস্তগির।
সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৪ মিনিটে প্রায় পুরো পাকিস্তান বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। করাচি, লাহোর, ইসলামাবাদ, পেশোয়ারসহ দেশটির কোনো বড় নগরীতে বিদ্যুৎ ছিল না।
পরদিন স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ৫টার দিকে জাতীয় গ্রিডের ১,১১২টি স্টেশনের সবগুলো সচল হওয়ার কথা টুইটারে জানান জ্বালানিমন্ত্রী খুররাম।
পরে টেলিভিশনে এক ভাষণে তিনি বলেন, আগামী আরো দুইদিন চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং অব্যাহত থাকবে।
তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘‘গতকাল যা ঘটেছে সেখান থেকে আমাদের শিক্ষা হয়েছে। এ খাতে আরো বিনিয়োগ প্রয়োজন। আগের সরকারের আমল থেকেই এই খাতের উন্নয়নে কোনো বিনিয়োগ করা হয়নি।”
নিজেদের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সক্ষমতা পাকিস্তানের রয়েছে। কিন্তু তাদের এই খাতটি এতটাই বেশি ঋণের মধ্যে রয়েছে যে এটি অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ লাইনের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন’ হচ্ছে এ খাতের সবচেয়ে দুর্বল দিক।
চীন তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ অংশ হিসেবে পাকিস্তানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ছয় হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ স্কিম ঘোষণা করেছে। ওই স্কিমের আওতায় দেশটি পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাতেও বিনিয়োগ করেছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ বিনিয়োগ চীন করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পাকিস্তানে ‘লোডশেডিং’ এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। দেশটিতে দিনে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। যাতে উৎপাদন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের দৈনন্দিন জীবন।
জাকোবাবাদের একটি স্কুলের অধ্যক্ষ সারা খান বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না।
‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষজনকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের ওই নগরীতে এখন দিনে প্রায় ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।