সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দর শহর তারতুসের উপকূলে ডুবে যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের নৌকার অন্তত ৬১ আরোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার লেবাননের পরিবহনমন্ত্রী আলি হামি এ খবর জানিয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত আছে।
অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী ওই নৌকাটি চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি উত্তর লেবানন থেকে যাত্রা শুরু করার পর সিরিয়ার উপকূলে গিয়ে ডুবে যায়।
আলি হামি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, জীবিত উদ্ধার পাওয়া ২০ জনকে সিরিয়ার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
লেবানন গভীর অর্থনৈতিক সংকটে ভূগতে থাকায় আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তার আশায় প্রচুর মানুষ দেশটি ছাড়তে শুরু করেছে। স্থানীয় লেবাননিদের পাশাপাশি দেশটিতে থাকা সিরীয় ও ফিলিস্তিনিরাও অভিবাসন প্রত্যাশীদের মিছিলে আছেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকাল থেকে তারাতুস উপকূলে থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের লাশ উদ্ধার করতে শুরু করে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ। উদ্ধার পাওয়া জীবিতদের উদ্ধৃত করে সিরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার লেবাননের মিনেহ অঞ্চল থেকে ১২০ অথবা দেড়শ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে নিয়ে একটি নৌকা ইউরোপের পথে রওনা হয়েছিল।
“এটি ডুবে গেছে। কীভাবে তার বিস্তারিত জানি না আমি,” বলেন হামি।
সিরিয়ার বন্দর অধীদপ্তরের মহাপরিচালক সামের কুবরাসলি জানিয়েছেন, শুক্রবারও উদ্ধার তৎপরতা চলমান আছে।
সিরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারতুসের উপকূলীয় ছোট দ্বীপ আরওয়াদের বন্দরের পরিচালক স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাদের জানায়, নোঙর করে থাকা একটি জাহাজের কাছে ডুবে যাওয়া এক ব্যক্তির মৃতদেহ দেখা গেছে।
তখন মন্ত্রণালয়টি ওই লাশ উদ্ধারে একটি নৌকা পাঠায়। সেখানে গিয়ে তারা একটি শিশুর মৃতদেহও দেখতে পায়, তারপর অন্য মৃতদেহগুলো তাদের নজরে আসে।
জীবিত ও মৃতদের অধিকাংশকেই আরওয়াদ দ্বীপের কাছে পাওয়া গেছে বলে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে।
খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে সাগর উত্তাল থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বুধবার লেবানন সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তাদের দেশের জলসীমায় বিকল হয়ে পড়া একটি নৌকা থেকে ৫৫ জনকে উদ্ধার করেছে তারা আর নৌকাটিকে টেনে তীরে নিয়ে আসা হচ্ছে।
এপ্রিলে ত্রিপোলির কাছ থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে রওনা হওয়া একটি নৌকা উপকূলে লেবাননের নৌবাহিনীর তাড়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডুবে যায়। ওই নৌকায় প্রায় ৮০ জন লেবাননি, সিরীয় ও ফিলিস্তিনি অভিবাসন প্রত্যাশী ছিল। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে উদ্ধার করা গেলেও সাত জন ডুবে মারা যায় ও ৩০ জন নিখোঁজ হয়ে যায় বলে দেশটির সরকারি ভাষ্যে বলা হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথমদিকে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, সাগর পথে লেবানন ছাড়তে চাওয়া বা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ২০২১ সালে আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি ২০২২ এ অভিবাসন প্রত্যাশীর সংখ্যা আরও ৭০ শতাংশ বেড়েছে।