চীনের অনেক হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রসূতি বিভাগ

মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে, সন্তান থাকলে আর্থিক ও কর সংক্রান্ত নানা সুবিধা দিয়ে এবং বাড়ি নির্মাণে ভর্তুর্কি দেওয়াসহ আরো বেশ কিছু ভাতা ও ব্যবস্থা গ্রহণে করে চীন সরকার তরুণ দম্পতিদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে চাইছে।

রয়টার্স
Published : 19 March 2024, 12:32 PM
Updated : 19 March 2024, 12:32 PM

সেবা গ্রহণের চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় চীনের অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রসূতি বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছে বা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটিতে শিশু জন্মহার রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। টানা দুই বছর চীনে মোট জনসংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে।

জীবন যাত্রার অত্যধিক ব্যয়সহ নানা কারণে চীনের তরুণীরা দিন দিন সন্তান জন্মদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। শিশু জন্ম কমে যাওয়ায় অনেক হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে সেবা নিতে কেউ আর আসছে না। বিশেষ করে পূর্বের প্রদেশ ঝেজিয়াং এবং দক্ষিণের জিয়াংজি প্রদেশের কয়েকটি হাসপাতাল গত দুই মাসে তাদের প্রসূতি বিভাগ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যে ঘোষণার নোটিস দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জিয়াংজি প্রদেশের গানঝউ সিটির দ্য ফিফথ পিপুলস হসপিটাল উইচ্যাটে তাদের অফিসিয়াল একাউন্টে বলেছে, ১১ মার্চ থেকে তাদের প্রসূতি বিভাগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ঝেজিয়াং প্রদেশের জিয়াংশান হসপিটাল অব ট্রেডিশনাল মেডিসিন তাদের উইচ্যাট একাউন্টে ঘোষণা দিয়েছে, তাদের প্রসূতি বিভাগের কার্যক্রম ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে।

এমন সময়ে হাসপাতালগুলো থেকে প্রসূতি বিভাগ বন্ধের ঘোষণা আসছে যখন চীন সরকারের নীতিনির্ধারকরা তরুণ দম্পতিদের কিভাবে সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করা যায় তার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। চীনে এক দিকে শিশু জন্মহার দ্রুত কমছে, অন্যদিকে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এতে ভবিষ্যতে কর্মশক্তি কমে যাওয়া এবং অবসরভোগী মানুষের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০২৩ সালে টানা দ্বিতীয় বছর চীনের মোট জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। গত বছর দেশটিতে শিশু জন্মহারও রেকর্ড পরিমাণ কম ছিল। সেই সঙ্গে মৃত্যুহার ছিল রেকর্ড পরিমান বেশি। যেজন্য কোভিড-১৯ মহামারীকে দায়ী করা হয়।

চীনে ২০২০ সালেও ৮০৭টি ম্যাটারনিটি হাসপাতাল ছিল। ২০২১ সালে যা কমে ৭৯৩ হয়েছে।

Also Read: চীনে বার্ষিক জন্মহার হ্রাসের রেকর্ড

Also Read: জন্মহার বাড়াতে ব্যবস্থা নেবে চীন: শি

চীনে শিশুদের যত্ন এবং বড় করে তোলার খরচ এখন অনেক বেশি। যে কারণে অনেক নারী সন্তান গ্রহণ করতে চান না। অনেক তরুণী আবার বিয়ে করতেই আগ্রহী নন। কারণ, চীনের প্রথাগত সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদেরই সংসার এবং সন্তান যত্নের দায়িত্ব নিতে হয়। যে কারণে অনেক নারী নিজের ক্যারিয়ার ঠিকমত এগিয়ে নিতে পারেন না।

মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে, সন্তান থাকলে আর্থিক ও কর সংক্রান্ত নানা সুবিধা দিয়ে এবং বাড়ি নির্মাণে ভর্তুর্কি দেওয়াসহ আরো বেশ কিছু ভাতা ও ব্যবস্থা গ্রহণে করে চীন সরকার তরুণ দম্পতিদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে চাইছে।

কিন্তু গড় মাথাপিছু আয়ের সঙ্গে তুলনা করলে চীন এখনও বিশ্বে শিশু লালন-পালনে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি।