যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ প্রথমবার ৩১ লাখ কোটি ডলার ছাড়াল

যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া সরকারি ঋণ গত সোমবার ৩১ লাখ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছায় বলে জানিয়েছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2022, 05:29 PM
Updated : 5 Oct 2022, 05:29 PM

নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতি, বাড়তে থাকা সুদের হার এবং প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির ঝুঁকির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ প্রথমবারের মত ৩১ লাখ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

গত সোমবার দেশটির মোট পাবলিক ডিবেট আউটস্ট্যান্ডিং (সরকারি ঋণের বকেয়া) ৩১ লাখ ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছায় বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়।

সিএনএন জানায়, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে ধারের পথ বেছে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ২০২০ সালের শুরুতে বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় আট লাখ কোটি মার্কিন ডলার।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আমলে এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলের শুরুর দিকে ওই ঋণ করা হয়। ওই সময় ঋণের বিপরীতে সুদের হার খুবই কম ছিল।

কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। বরং যুক্তরাষ্ট্র এখন নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতি দেখছে। পণ্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে দেশটির ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক কয়েক দফায় সুদের হার বাড়িয়েছে। ফলে এখন ঋণের বিপরীতে অনেক বেশি মূল্য চুকাতে হয়।

রেসপনসিবল ফিসক্যাল বাজেটের (সিআরএফবি) একটি কমিটি গত মাসে হিসাব করে দেখিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেসব নীতি গ্রহণ করেছেন, তাতে ২০২১ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে বাজেট ঘাটতিতে আরও চার লাখ ৮০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার যোগ হবে।

সিআরএফবি-র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অত্যধিক ঋণ গ্রহণ মুদ্রাস্ফীতির চাপ অব্যাহত রাখবে, যা ২০৩০ সাল বা তার আগেই জাতীয় ঋণকে একটি নতুন রেকর্ডে নিয়ে যাবে এবং এক দশক পর কেন্দ্রকে যে পরিমাণ সুদ দিতে হয় তা তিনগুণ হয়ে যাবে। এমনকী তার আগেও অবশ্যম্ভাবীরূপে এ পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে, যদি সুদের হার আরও দ্রুত বাড়ে বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হয়।

গত এক দশকে আমেরিকার ঋণের হার বেড়েছে। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়া সরকারি ঋণ ছিল ১০ লাখ ৬০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

২০১৭ সালে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের সময় তা ছিল ১৯ লাখ ৯০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। বাইডেনের দায়িত্ব গ্রহণের সময় যা পৌঁছে যায় ২৭ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স পেলে বলেন, আরেকটি ঋণের মাইলফলক অতিক্রম করা অবশ্যই ভবিষ্যতে ‘খুব বড় সমস্যার’ ইঙ্গিত দেয়। যদিও নিকট ভবিষ্যতে উচ্চ মাত্রার মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ।

‘‘যে কোনও ধরনের ঋণের সমস্যা সত্যিই একটি সম্ভাব্য সমস্যা- যদিও আমি এটিকে এমনকী একটি নির্দিষ্ট সমস্যাও বলব না। কিন্তু পাঁচ থেকে ১০ বছরের জন্য এটি একটি সম্ভাব্য সমস্যা হয়ে থাকবে।

‘‘বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি হওয়ার একটি সুবিধা হল সবাই আপনার ঋণ সস্তায় কিনতে চায়।”