গুজরাটে সেতু ধস: ‘অগভীর পানি আর পাথর’ এত মৃত্যুর কারণ

গত রোববার মোরবির মাচ্চু নদীর উপর ১৪০ বছরের পুরাতন, সংকীর্ণ ওই ঝুলন্ত সেতুটি ধসে পড়ে ১৩৫ জন প্রাণ হারায়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2022, 04:48 AM
Updated : 2 Nov 2022, 04:48 AM

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে ব্রিটিশ আমলের একটি ঝুলন্ত সেতু ভেঙ্গে পড়ার ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যু কীভাবে ঘটে থাকতে পারে সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করেছেন ভারতের দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর প্রধান।

ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) কমান্ড্যান্ট ভিভিএন প্রসন্ন কুমার মঙ্গলবার এনডিটিভিকে বলেছেন, মোরবি শহরের ওই সেতুটির দুই প্রান্তে নদীর পানি কম, মাত্র প্রায় ১০ ফুটের গভীর হওয়ায় সেতু ভেঙ্গে পড়ে যাওয়া লোকজন সেখানে নদীর পাথুরে তলদেশে সজোরে ধাক্কা খায়, এতেই অধিকাংশের মৃত্যু হয়।   

গত রোববার সন্ধ্যায় মোরবির মাচ্চু নদীর উপর ১৪০ বছরের পুরাতন, সংকীর্ণ ওই ঝুলন্ত সেতুটি ধসে পড়ে ১৩৫ জন প্রাণ হারায়।

কুমার আরও জানান, সেতুর নিচে নদীর মাঝখানটায় পানি স্থির হয়ে আছে, সেখানে প্রায় কোনো স্রোত নেই আর সে জায়গাটা প্রায় ২০ ফুট গভীর। লাশের খোঁজে থাকা নৌবাহিনীর ডুবুরিরা অনায়াসে নদীর তলদেশে পৌঁছে যেতে পেরেছেন।  

“কিন্তু এখানে পানিটা ঘোলা, দৃষ্টিসীমা কম। আমরা মৃতদেহ খুঁজে পেতে ক্যামেরা ও সোনার যন্ত্র লাগানো অত্যাধুনিক একটি রিমোট ডুবোযান ব্যবহার করছি। নদীর তলদেশটা পুরোটাই পাথুরে, এ কারণেই অনেক মানুষ আহত ও নিহত হয়,” বলেন এনডিআরএফ প্রধান।

তিনি জানান, অধিকাংশ মৃতদেহ ভেঙ্গে পড়া সেতুটির নিচেই পাওয়া গেছে, নদীতে কোনো স্রোত না থাকায় তারা ভেসে যায়নি। 

মোরবির বেসামরিক প্রশাসন নিখোঁজ মানুষের যে তথ্য দিয়েছে সে অনুযায়ী একটি বা দুটি মৃতদেহ এখনও রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

মঙ্গলবার মোরবি গিয়ে ধসে পড়া সেতুস্থল ঘুরে দেখছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে জেলা হাসপাতালে আহতদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। মোদীর পরিদর্শনকে সামনে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতারাতি সেটি সংস্কার করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তুলে বলে খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের। 

গুজরাট রাজ্যের রাজধানী শহর আহমেদাবাদ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯ শতকে,ব্রিটিশ আমলে। স্থানীয়দের কাছে জুল্টো পুল নামে পরিচিত ২৩০ মিটার দীর্ঘ ওই সেতুতে অনেকেই বেড়াতে যান।

সাত মাস বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ সেরে দুর্ঘটনার মাত্র চার দিন আগে গুজরাটের নববর্ষের দিন খুলে দেওয়া হয়েছিল সেতুটি। কেন সেটি ভেঙে পড়ল তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন।

অতিরিক্ত লোকের ভারেই সেতুটি ধসে পড়েছে, গুজরাটের ফরেনসিক ল্যাবরেটরির তদন্তে এমনটি দেখা গেছে বলে কয়েকটি সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন:

Also Read: গুজরাটের ধসে পড়া সেতু ও আহতদের দেখলেন মোদী

Also Read: গুজরাটের সেতু দুর্ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯