এক সময় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, উভয়েই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।
Published : 18 Jan 2024, 11:49 AM
নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় নেতারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে আজারবাইজানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের এখনও কেনো সমঝোতা হয়নি।
ফলে কারাবাখ ও এর এক লাখ ২০ হাজার আর্মেনীয় বাসিন্দার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান ও অঞ্চলটির আর্মেনীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে, এই বিরোধে কারাবাখের আর্মেনীয় বাসিন্দাদের সবসময় সমর্থন দিয়ে এসেছে প্রতিবেশী আর্মেনিয়া।
আন্তর্জাতিকভাবে এই অঞ্চলটি আজারবাইজানের অন্তর্ভূক্ত বলে স্বীকৃত। কিন্তু আর্মেনিয়ার সমর্থনে নাগোরনো-কারাবাখের আর্মেনীয়রা প্রায় স্বাধীনভাবেই ভূখণ্ডটি শাসন করে আসছিল, কিন্তু এখন আজারবাইজান অঞ্চলটিকে তাদের রাষ্ট্রের অংশ করে নিতে চাইছে।
এক সময় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান, উভয়েই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর কারাবাখের দখল নিয়ে দুই প্রতিবেশী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। তখন অঞ্চলটির অধিকাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছিল আর্মেনিয়া। কিন্তু ২০২০ সালের এই লড়াই তার অনেক এলাকাই পুনরুদ্ধার করে আজারবাইজান।
চলতি সপ্তাহে নাগোরনো-কারাবাখের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ঝটিকা সামরিক অভিযান শুরু করে বাকু। আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয় আজারবাইজান। অস্ত্রবিরতির শর্তগুলো থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, অঞ্চলটিতে আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এরপর স্থানীয় আর্মেনীয়রা জানিয়েছেন, তারা নিগৃহীত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন। বিশ্ব তাদের পরিত্যাগ করেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে বসবাস করা এক আর্মেনীয় বলেছেন, “আমাদের একমাত্র আশা রাশিয়ার শান্তিরক্ষীদের সাহায্য। বিশ্ব আমাদের দিকে থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়েছে, কিছুই শুনতে চায় না। আমাদের ধারণা, যদি এক ঘণ্টার জন্যও কোনো শান্তিরক্ষী না থাকতো আমরা গণহত্যার শিকার হতাম।”
স্ব-শাসিত প্রজাতন্ত্র নাগরনো-কারাবাখের প্রেসিডেন্ট সামভেল শাহরামানিয়ানের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান রয়টার্সকে বলেছেন, “অবশ্যই এসব প্রশ্নের মীমাংসা হওয়া দরকার। এখনও পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট ফলাফল আসেনি।
“পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে আছে। লোকজন ক্ষুধার্ত। বিদ্যুৎ নেই, জ্বালানি নেই। অনেকেই এখন শরণার্থী।”
এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, শুধু একটি করিডোর ধরে আর্মেনিয়া থেকে কারবাখে মানবিক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে গাড়িবহর আসার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজারবাইজানের মধ্যে দিয়ে আসা দ্বিতীয় আরেকটি করিডোর দিয়ে থেকেও খাদ্য সহায়তা পাঠানো হচ্ছে।
কিন্তু কারাবাখের আর্মেনীয়রা জানিয়েছেন, আজারবাইজান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চললেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কোনো সমঝোতা চুক্তি হয়নি। সংবাদ সূত্র; রয়টার্স
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)