ইরানে ‘সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় কারণে’ মৃত্যুদণ্ড পাওয়া এক বিক্ষোভকারীর আপলি আবেদন গ্রহণ করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
ওই বিক্ষোভকারীর নাম সামান সৈয়দি। তারসঙ্গে মোহাম্মদ কাবাদলু নামে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আরেক বিক্ষোভকারীর আপিল আবেদন গ্রহণ না করে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যদিও প্রথমে উভয় বিক্ষোভকারীর আপিল আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বলে আদালত থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে অন্য এক বিবৃতিতে বলা হয়, শুধুমাত্র সামান সৈয়দির আপিল গ্রহণ করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক কুর্দি তরুণীর মৃত্যু ঘিরে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হিজাব ঠিকমত না পরার অভিযোগ তুলে পুলিশ মাশাকে আটক করে। মাশার পরিবারের দাবি, গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের মারধরে মাশা কোমায় চলে যান এবং গ্রেপ্তারের তিনদিন পর হাসপাতালে মারা যান। ওই তিনদিন কোমায় ছিলেন মাশা।
প্রায় তিন মাস ধরে চলা ওই বিক্ষোভে দুইশ মানুষ নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে ইরান সরকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করেছে। তাদের মধ্যে গত ৮ ডিসেম্বর মহসেন শেকারি এবং ১২ ডিসেম্বর মাজিদ রেজা রেহনাভার্দকে জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়া হয়।
মাজিদ রেজাকে (২৩) নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর ‘খোদার বিরুদ্ধে লড়াই করার দায়ে’ দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছিল। আর মহসেন শেকারিকে (২৩) দাঙ্গাকারী হিসেবে সেপ্টেম্বরে তেহরানের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে বড় ছোরা দিয়ে আধাসামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে আঘাত করার দায়ে দোষীসাব্যস্ত করা হয়।
মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরান সরকার আদালতের কাছে কমপক্ষে ২৬ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে।
‘‘ইরানকে কাঁপিয়ে দেওয়া এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ভয় দেখাতেই মূলত গ্রেপ্তার বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।”