প্রায় পুরো উত্তর গোলার্ধজুড়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, রাশিয়া ও কানাডার বিভিন্ন অংশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।
Published : 24 Jul 2024, 07:51 PM
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সোমবার, ২২ জুলাই বিশ্বে আবার উষ্ণতম দিনের নতুন রেকর্ড হয়েছে। রোববার উষ্ণতম দিনের নতুন রেকর্ড হওয়ার পরদিনই তা ভেঙে আরেকটি নতুন রেকর্ড হয়।
প্রায় পুরো উত্তর গোলার্ধজুড়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল, রাশিয়া ও কানাডার বিভিন্ন অংশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিশ্বের ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বাতাসের গড় তাপমাত্রা বেড়ে ১৭ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। এটি আগের দিন রোববার রেকর্ড করা তাপমাত্রা থেকে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ পরিষেবা।
রয়টার্স জানিয়েছে, এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৪০ সাল থেকে আবহাওয়ার এ ধরনের তথ্য অনুসরণ করে আসছে।
বিশ্বের এই গড় তাপমাত্রার মধ্যে দক্ষিণ গোলার্ধের তাপমাত্রাও অন্তর্ভুক্ত। সেখানে এখন শীতকাল চলায় বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রার গড় কম হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ও বুধবার ফের সোমবারের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে, কারণ তাপমাত্রা সাধারণত গুচ্ছ আকারে বাড়তে থাকে।
এর আগে শেষ উষ্ণতম দিনের রেকর্ড হয়েছিল ২০২৩ সালের জুলাইয়ে। তখন ৩ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত চার দিনজুড়ে পরপর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছিল। তারও আগে উষ্ণতম দিনের রেকর্ড হয়েছিল ২০১৬-র অগাস্টে।
উত্তর গোলার্ধের চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, স্পেন, জাপান, গ্রিস, তাইওয়ানসহ বহু দেশজুড়ে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। চীনের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের অনেক অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছড়িয়ে গেছে। বুধবার উহান শহরে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করার পর রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
জাপানের ৪৭টি প্রিফেকচারের মধ্যে ৩৯টিতে হিট স্ট্রোক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গ্রিসে টানা ১৬ দিন ধরে দাবদাহ চলার পর বুধবার তা শেষ হয়েছে; এটি দেশটির রেকর্ডকৃত ইতিহাসে দীর্ঘতম দাবদাহের ঘটনা।
এমনকী আর্কটিক অঞ্চলেও তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঞ্চলের ফেয়ারব্যাঙ্কস এ বুধবার তাপমাত্রা ৩১ সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কানাডা, রাশিয়া ও নরওয়ের আর্কটিক অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা ৯ সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আবার কানাডা ও রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে অস্বাভাবিক উষ্ণ গ্রীষ্মকালের কারণে বহু এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মহাসাগরগুলো উষ্ণ হয়ে ওঠায় ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ঘূর্ণিঝড় আরও তীব্র, আরও বেশি বিধ্বংসী বাতাসের বেগ ও বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হওয়ার হুমকি তৈরি করছে।