বাখমুতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে: জেলেনস্কি

পূর্ব ইউক্রেইনের বাখমুত নগরীকে ঘিরে ফেলতে রাশিয়ার জোর হামলার মধ্যে সেখানকার এক ইউক্রেনীয় কমান্ডার বলেছেন, পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত উত্তেজনাকর’।

পূর্ব ইউক্রেইনের বাখমুত নগরীকে ঘিরে ফেলতে সপ্তাহব্যাপী হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া বাহিনী। ভাড়াটে সেনাদের ওয়াগনার গ্রুপসহ রুশ বাহিনী নগরীটিতে ইউক্রেইনীয় সেনাদের সরবরাহ পথ বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে চাইছে।

সেখানে পরিস্থিতি ‘কঠিন থেকে আরও কঠিন হয়ে উঠছে’ বলে জানিয়েছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বাখমুতে ইউক্রেনীয় স্থলবাহিনীর কম্যান্ডার কর্নেল ওলেক্সান্দর সাইরিস্কিও নগরীর পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত উত্তেজনাকর’ বলে বর্ণনা করেছেন। 

তিনি বলেন, “প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরও শত্রুরা সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ওয়াগনার ইউনিটকে লেলিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের সেনাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান ভেঙে ফেলতে চেষ্টা করছে এবং নগরী ঘিরে ফেলতে চাইছে।”

রাশিয়ার আরআইএ বার্তা সংস্থা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাখমুতের আকাশে চক্কর দিচ্ছে রাশিয়ান এসইউ-২৫ জঙ্গি বিমান। বাখমুত দখলে নিতে পারলে অর্ধবছরের মধ্যে এটিই হবে রাশিয়ার জন্য্ প্রথম বড় জয়। এতে দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাকী শহুরে কেন্দ্রগুলো রাশিয়ার কবজায় চলে যাওয়ার পথ খুলে যাবে।

অপরদিকে, ইউক্রেইন বাখমুতকে নিজেদের প্রতিরক্ষার প্রধান দুর্গ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এ নগরীর পতন হলে ইউক্রেইনের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে। ফলে যে কোনো উপায়ে বাখমুতের দখল ধরে রাখতে চায় কিইভ।

ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বাখমুতকে ‘আমাদের দুর্গ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই নগরীকে শেষ পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখতে হবে। রাতের বেতার ভাষণে তিনি বলেন, “আমাদের অবস্থান সুরক্ষিত রাখার জন্য যেগুলো কাজে লাগানো যায়, এমন সবকিছু রাশিয়া বাহিনী অবিরাম ধ্বংস করছে।”

ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী বলেছে, রাশিয়া বাখমুতের চারপাশের বসতিগুলোতে গোলা হামলা চালাচ্ছে। এসব বসতিতে ৭০ হাজার মানুষের বাস ছিল। কিন্তু এখন সব ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

গত একদিনে বাখমুত এবং কাছের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে ইউক্রেইনের সেনারা শত্রুপক্ষের ৬০ টিরও বেশি হামলা প্রতিহত করেছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

তিন দিক থেকে বাখমুতকে ঘিরে ফেলেছে রুশ বাহিনী। এখন তারা পুরোপুরি  নগরীটিকে অবরুদ্ধ  করে ফেলতে চাইছে। বাখমুতের কেবল দক্ষিণাঞ্চলটিই ইউক্রেইন বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে। 

আর অন্য প্রতিটি দিকের অবস্থাই এখন অনিশ্চিত। ফ্রন্টলাইন কোথায় সেটিও বলা এখন অসম্ভব, বলেছেন ইউক্রেইনের সামরিক বিশ্লেষক ওলেহ জুদানভ।