ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

সফল হওয়ার আশায় ওয়াশিংটন যে ঝুঁকি নিচ্ছে তার জন্য তাদের ‘পস্তাতে’ হবে বলে মন্তব্য করেছে পিয়ংইয়ং।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2022, 07:53 AM
Updated : 17 Nov 2022, 07:53 AM

কোরীয় উপদ্বীপ ও এর আশপাশের এলাকায় মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে নিরাপত্তা উপস্থিতি জোরদার করার যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় ‘কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়া’ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া।

সফল হওয়ার আশায় ওয়াশিংটন যে ঝুঁকি নিচ্ছে তার জন্য তাদের ‘পস্তাতে’ হবে বলে মন্তব্য করেছে পিয়ংইয়ং।  

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ১০টা ৪৮ মিনিটের দিকে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর ওনসান থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয় বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

চলতি বছর উত্তর কোরিয়া রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, এ উৎক্ষেপণে ওই রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ হল।

কেবল ক্ষেপণাস্ত্রই নয়, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া চলাকালে সম্প্রতি পিয়ংইয়ং সাগরে কয়েকশ রাউন্ড কামানের গোলাও ছুড়েছে; ওই মহড়ার কোনো কোনোটিতে জাপানও অংশ নিয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোই সন হুই যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সাম্প্রতিক ত্রিপাক্ষিক সম্মেলনের সমালোচনা করার দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে পিয়ংইয়ং বৃহস্পতিবার ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ে।

ত্রিপাক্ষিক ওই সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতারা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে বৃহত্তর নিরাপত্তা সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন।

ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাদের দুই এশীয় মিত্রের সুরক্ষা ও তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদারে পারমাণবিক অস্ত্রসহ ‘পূর্ণমাত্রার সক্ষমতা’ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

চোই বলেছেন, তিনটি দেশের ‘আগ্রাসনের জন্য যুদ্ধমহড়া’ উত্তরের লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে, বরং এটি তাদের জন্য ‘আরও গুরুতর, বাস্তবসম্মত ও অনিবার্য হুমকি’ নিয়ে আসবে।  

“মিত্রদের ‘বর্ধিত প্রতিরোধ জোরদার প্রস্তাব’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যত আগ্রহী হবে, যতই তারা উসকানিমূলক ও ধাপ্পা দেওয়া সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদার করবে, ডিপিআরকের সামরিক জবাব ততই আরও কঠোর হবে,” বিবৃতিতে চোই এমনটিই বলেছেন বলে জানিয়েছে উত্তরের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ।

ডিপিআরকে বলতে তিনি উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়াকে বুঝিয়েছেন। 

“এটা যে জুয়া, যুক্তরাষ্ট্র সে বিষয়ে ভালোভাবেই অবগত, যার জন্য নিশ্চিতভাবেই তাদের পস্তাতে হবে,” বলেছেন চোই।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, ত্রিপক্ষীয় সম্মেলন ও বর্ধিত প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে তাদের সহযোগিতার লক্ষ্যই হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির মোকাবেলা করা।

২০১৭ সালের পর এ বছরই প্রথম উত্তর কোরিয়া একটি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মে মাস থেকে বলে এলেও ঠিক কবে ওই পরীক্ষা হবে, তার সঠিক সময় এখনও অজানা।

ত্রিপাক্ষিক সম্মেলনের পর ওয়াশিংটন, সিউল ও টোকিও এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, তারা পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক পরীক্ষায় ‘শক্তিশালী ও তীব্র প্রতিক্রিয়া’ দেখবে।

চোই বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সামরিক কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন মহড়ার ‘বৈধ ও তাৎক্ষণিক পাল্টা প্রতিক্রিয়া’।

দুই কোরিয়ার বিষয়সমূহ দেখভালের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার পুনরেকত্রীকরণ মন্ত্রী কেওন ইয়ং-সে চীনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সময়সূচির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া সম্ভবত তাদের পারমাণবিক পরীক্ষা কিছু সময়ের জন্য স্থগিত রেখেছে।

“অগাস্টে পারমাণবিক আইন পুনর্বিন্যস্ত করার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়াও কিছু রাজনৈতিক প্রভাব অর্জন করেছে, এ কারণেই হয়তো তার শিগগিরই পারমাণবিক পরীক্ষা দরকার পড়ছে না,” বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন কেওন। সাক্ষাৎকারটি বৃহস্পতিবারই প্রকাশিত হয়েছে।