চীনের ওপর নজর রাখতে ফিলিপিন্সে উপস্থিতি জোরদার করছে যুক্তরাষ্ট্র

দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অধীনে ফিলিপিন্সের আরও চারটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে সামনে থেকে চীনের কর্মকাণ্ড সহজে নজরে রাখা যাবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2023, 04:33 PM
Updated : 2 Feb 2023, 04:33 PM

নতুন একটি চুক্তির অধীনে ফিলিপিন্সের আরও চারটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যার ফলে দেশটি এখন আরও সামনে থেকে দক্ষিণ চীন সাগর এবং তাইওয়ান ঘিরে চীনের কর্মকাণ্ড সহজে নজরে রাখার সুযোগ পাবে।

তাছাড়া, উত্তরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দক্ষিণে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত চীন বিরোধী যে বলয় ওয়াশিংটন তৈরি করতে চাইছিল তাতে একমাত্র ফাঁক ছিল ফিলিপিন্স। এই চুক্তির মাধ্যমে সেই শূন্যতা পূরণ হল।

ফিলিপিন্সে আরও সেনা সমাবেশের মাধ্যমে ওয়াশিংটন এখন তাদের গুরুত্বপূর্ণ দুই লক্ষ্য তাইওয়ান এবং দাক্ষিণ চীন সাগর উভয়ের উপর আরও প্রভাব বিস্তার করতে পারবে।

ফিলিপিন্স একসময় যুক্তরাষ্ট্রের কলোনি ছিল। তিন দশকের বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিপিন্স ছেড়ে যায়।

দুই দেশের নতুন চুক্তির বিষয়ে ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাডিজের সাউথইস্ট এশিয়া প্রকল্পের পরিচালক গ্রেগরি বি পোলিং বলেন, ‘‘দক্ষিণ চীন সাগরে এমন কোনো ঘটনা ঘটা সম্ভব না যেখানে ফিলিপিন্সকে প্রয়োজন পড়বে না।

‘‘যুক্তরাষ্ট্র সেখানে স্থায়ী ঘাঁটি চায় না। বরং তারা জায়গা চায়।”

এনহ্যান্সড ডিফেন্স কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট বা (ইডিসিএ) চুক্তির আওতায় ফিলিপিন্সের পাঁচটি ঘাঁটিতে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত সংখ্যক সেনা প্রবেশাধিকার রয়েছে।

নতুন চুক্তির বদৌলতে এখন ফিলিপিন্সের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে মার্কিন সেনারা আরও প্রবেশাধিকার পাবে এবং তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম বিপুল সংখ্যক মার্কিন সেনা দেশটিতে ফিরে যাবে।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ বংবং মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

তাদের দুইজনের বৈঠকের পর ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে নতুন ওই চুক্তির কথা জানানো হয়। কিন্তু নতুন করে কোন চারটি ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে তা জানানো হয়নি।

তবে সেগুলোর মধ্যে তিনটি ফিলিপিন্সের উত্তর প্রান্তের লুজন দ্বীপ হতে পারে বলে ধারণা বিবিসি’র। চীনকে বাদ দিলে তাইওয়ানের কাছের একমাত্র বৃহৎ ভূখণ্ড ওই লুজন দ্বীপ।

আজকাল যুক্তরাষ্ট্র প্রচুর সেনা অবস্থান করতে পারে এমন ঘাঁটি গড়ার চাইতে বরং এমন সব জায়গায় প্রবেশাধিকার চাইছে, যেখান থেকে চাইলে বা প্রয়োজন পড়লে ‘হালকা এবং নমনীয়’ অভিযান পরিচালনা করা যাবে। সেইসঙ্গে রসদ সরবরাহ ও নজরদারিও সম্ভব হবে।

অন্য কথায় বলা যায়, তারা আর ১৯৮০ এর দশকে ফিরতে চাইছে না। যখন ফিলিপিন্সে ১৫ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করত। এশিয়া মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রে সর্ববৃহৎ সেনাঘাঁটি দুটো ছিল ফিলিপিন্সে।