জম্মু ও কাশ্মীরে আবার ‘সন্ত্রাসী’ হামলা, নিরাপত্তা সদস্য নিহত

জম্মুর কাঠুয়ার হামলাকারীদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাবি করে তারা পাকিস্তানের থেকে এসেছেন বলে ইঙ্গিত করেছেন এক ভারতীয় পুলিশ কর্মকর্তা।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে আবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় কাঠুয়ার একটি গ্রামে এবং ডোডায় সেনা ছাউনিতে হামলা চালিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। গোলাগুলিতে আধা সামরিক বাহিনীর এক সদস্য ও এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নিহত হয়েছেন।

রাতেই জম্মুর দুই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বন্দুক লড়াই শুরু হয়। এর মধ্যে ডোডা এলাকায় গোলাগুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাঁচ সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর এক কর্মকর্তা আহত হন।

জম্মু জোন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আনন্দ জৈন কাঠুয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে চলা অভিযানের তত্ত্বাবধান করছেন। তিনি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।

তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসীরা চত্বরগালা এলাকার একটি সেনা ঘাঁটিতে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও পুলিশের একটি যৌথ দলকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে, এ ঘটনার জেরেই ডোডায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বন্দুক লড়াই শুরু হয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই সন্ত্রাসী কাঠুয়াতে হামলা চালায়, এদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন। অন্যজনকে ধরতে কাঠুয়ার হীরানগর এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে তল্লাশি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

পুলিশ জানিয়েছে, কাঠুয়ায় হামলা চালানো সন্ত্রাসীরা কয়েকটি বাড়িতে পানি চেয়েছিল, এদের নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। কিছু গ্রামবাসী সবাইকে সতর্ক করার চেষ্টা করলে তারা গুলিবর্ষণ করে।

এতে এক গ্রামবাসী আহত হয় বলে জানিয়েছেন আনন্দ জৈন। কাঠুয়ায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে প্রকাশিত খবর অস্বীকার করেছেন তিনি।

এখানে গোলাগুলিতে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সদস্য।

এডিজিপি জৈন কাঠুয়ার হামলাকারীদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাবি করে নাম উল্লেখ না করে পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “এটি আমাদের শত্রুভাবাপন্ন প্রতিবেশী যারা সবসময় আমাদের দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এই হীরানগরের সন্ত্রাসী হামলাকেও নতুন অনুপ্রবেশের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।”

গত কয়েকদিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত রোববার জম্মুর রিয়াসি জেলায় পুণ্যার্থীদের বহনকারী একটি বাসে হামলা চালিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এতে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ি খাদে পড়ে যায় আর তাতে ১০ আরোহী নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়।

গত কয়েকদিনে জম্মুর যেসব এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে আগে সেখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই এই এলাকাগুলোকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ বলে ভাবা হতো। কিন্তু এখন হামলার ঘটনা ঘটায় জম্মুতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

মোদীর শপথের দিনই কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহত ৯