রাজধানী সানার একটি বিমানবন্দরে ইসরায়েলের হামলার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস সেখানে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
Published : 26 Dec 2024, 10:52 PM
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেনজুড়ে ‘হুতি সন্ত্রাসীদের’ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে। রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিভিন্ন বন্দর, সামরিক স্থপনাগুলোতে এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলে বার বার হুতিদের হামলার জবাবেই এ হামলা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুতিদের অবকাঠামো ধ্বংসের অঙ্গীকার করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে হুতি অবকাঠামোগুলোতে হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর ইয়েমেনজুড়ে এ হামলা হল। হুতি পরিচালিত গণমাধ্যম হামলায় অন্তত ৩ জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হওয়ার খবর দিয়েছে।
গত শনিবার ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতিরা ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে তা রাজধানী তেল আবিবে গিয়ে পড়ে। এরপরই নেতানিয়াহু পার্লামেন্টকে বলেন, “আমি আমাদের বাহিনীকে হুতিদের অবকাঠামো ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছি। কারণ, কেউ আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও পূর্ণ শক্তি নিয়ে হামলা করা হবে।”
“আমরা অশুভ শক্তিকে শক্তি দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে থাকব, তা এতে যতই সময় লাগুক,” বলেন তিনি।
বিবিসি জানায়, ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের হামলার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস সেখানে ছিলেন। তার একটি উড়োজাহাজের এক ক্রু আহত হয়েছেন এবং বিমানবন্দরে অন্তত ২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গেব্রিয়াসুস বলেন, “প্রায় দুই ঘণ্টা আগে আমরা সানায় ফ্লাইটে ওঠার সময় বিমানবন্দরে বিমান থেকে বোমা হামলা হয়। আমাদের একটি উড়োজাহাজের ক্রু সদস্য আহত হয়েছে। বিমানবন্দরেও অন্তত ২ জন নিহত হয়েছে। আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকে মাত্র কয়েকমিটার দূরেই ছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, ডিপারচার লাউঞ্জ... বিমানবন্দরের রানওয়েও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“আমি এবং আমার জাতিসংঘ ও ডব্লিউএইচও’র সহকর্মীরা নিরাপদে আছি। হামলায় যে পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছে তাদের প্রতি আমি মন থেকে সমবেদনা জানাচ্ছি।”
ইয়েমেনের মানবাধিকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং হুতিদের হাতে আটক জাতিসংঘ স্টাফদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে দেশটিতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন গেব্রিয়াসুস। তিনি সানার বিমানবন্দরে থাকার সময়ই ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়।
ইয়েমেনের হুতি কর্মকর্তারা ইসরায়েলের হামলাকে ইয়েমেনি জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ বলে বর্ণনা করেছেন। হুতি মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুসসালাম বলেন, “এ হামলা ইয়েমেনের সব জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিদের অপরাধ।”
ওদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একটি বিমান ঘাঁটি থেকে ইয়েমেনে হামলা নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলেছেন, আমরা ইরানের অশুভ অক্ষশক্তির সন্ত্রাসী হাত কাটতে থাকব, যতক্ষণ না কাজটি শেষ হয় ততক্ষণ পর্যন্ত।
ঘাঁটিতে নেতানিয়াহুর পাশেই উপস্থিত থাকা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, “আমরা সব হুতি নেতাকে খুঁজে বের করব। ইসরায়েলের লম্বা হাত থেকে কেউ ফসকাতে পারবে না।”