পশ্চিম আফ্রিকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি এবোলার বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে সিয়েরা লিওনের অন্যতম সেরা চিকিৎসক শেখ উমর খান নিজেই এবোলায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
Published : 30 Jul 2014, 03:46 PM
মঙ্গলবার দেশটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
উমর সিয়েরা লিওনের এবোলা আক্রান্ত একশ’রও বেশি রোগীর চিকিৎসা করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি থেকে তাদের রক্ষা করেছিলেন।
মাত্র এক সপ্তাহ আগে গণমাধ্যমে তার এবোলায় আক্রান্ত হওয়ার খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল।
মাত্র ৩৯ বছর বয়সী এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিয়েরা লিওনের সরকারি হাসপাতালে এবোলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন।
সিয়েরা লিওন সরকারের পক্ষ থেকে মহান এই চিকিৎসককে ‘জাতীয় বীর’ উপাধি দেয়া হয়েছে।
উমরের দুঃখজনক মৃত্যুর পর সহকারী চিকিৎসক ব্রিমা কারবো বলেছেন, “শেখ উমরের মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি, সিয়েরা লিওনে তিনি ছাড়া এবোলার আর কোনো বড় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই।”
নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এই চিকিৎসক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজের জীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “আমি নিজের জীবন নিয়েই শঙ্কিত। কারণ, আমার জীবনের একটা মূল্য আছে।”
কীভাবে ভাইরাসটি তার দেহে সংক্রমিত হয়েছিল তা পরিষ্কার নয়। মানবদেহের তরল বর্জ্য যেমন থুথু, ঘাম ইত্যাদির মাধ্যমে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
এবোলার চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলোর দুর্বল ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিলেন নিবেদিতপ্রাণ এ চিকিৎসক।
উমর ইবোলায় সংক্রমিত হয়েছেন শুনে হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আর্নেস্ট বাই কোরোমা।
তার এবোলায় সংক্রমিত হওয়ার খবর শোনার পর চোখে পানি চলে এসেছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিয়াত্তা কারগবো ।
পশ্চিম আফ্রিকায় এবোলা রোগের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত আরো কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মী রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। রোগটির চিকিৎসা করতে আসা দুই্ আমেরিকান চিকিৎসকও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার গিনি, লাইবেরিয়া এবং সিয়েরা লিওনে ফেব্রুয়ারি থেকে এবোলা ভাইরাসের প্রাদু্র্ভাব দেখা দেয়ার পর এ পর্যন্ত ৬৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এবোলা ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি।
প্রথম দিকে আক্রান্ত রোগীদের ৯০ শতাংশই মারা যাচ্ছিলেন, তবে এখন তা কমে ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে।