ইউক্রেইনের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ-১৭ বিমানের ২৯৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।
Published : 17 Jul 2014, 09:48 PM
বৃহস্পতিবার রুশ সীমান্তের কাছে পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বোয়িং নির্মিত ৭৭৭ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটি নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর যাচ্ছিল।
মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাকে “অত্যন্ত শোচনীয়” বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। এই বিপর্যয়ের দিনটিকে তিনি “শোচনীয় বছরের” আরও একটি “শোচনীয় দিন” বলে অভিহিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেইন দাবি করেছে, রুশ নির্মিত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটিকে ভূপাতিত করার জন্য গৃহবিবাদে জড়িত ইউক্রেইনের সরকারি ও বিদ্রোহী পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছে।
আমস্টারডাম বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ইউরোপীয় প্রধান বলেছেন, ওই ফ্লাইটে নেদারল্যান্ডসের ১৫৪ জন, অস্ট্রেলিয়ার ২৭ জন এবং মালয়েশিয়ার ৪৫ জন নাগরিক ছিলেন।
ইউক্রেইনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিমানে যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ জন নাগরিক ছিলেন। তবে বিমানে আসলেই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক ছিলেন কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন।
ফ্রান্স বলেছে, তাদের অন্ততপক্ষে চার জন নাগরিক ওই বিমানে ছিলেন।
রাশিয়া সীমান্তের ৪০ কিলোমিটার দূরে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেইনের দোনেস্ক শহরের নিকটবর্তী রাবোভো গ্রামের কাছের একটি মাঠে বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও অনেকের মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেছেন রয়টার্সের সাংবাদিকরা।
এক উদ্ধারকর্মী জানান, ঘটনাস্থলে অন্তত ১০০ মৃতদেহ তারা পেয়েছেন। প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে বিমানের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউক্রেইনের ওই এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ইউক্রেইনের সরকারি বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে সেখানে ইউক্রেইনের কয়েকটি সামরিক বিমানও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভূপাতিত করা হয়েছে। রশিয়ার সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে উন্নত প্রযুক্তির এসব ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ করে আসছে ইউক্রেইন।
ইউক্রেইনের প্রধানমন্ত্রী আরসেনি ইয়াতসেনিউক ইতোমধ্যে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে দোনেস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী কমান্ডার স্ত্রেলকভ বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইউক্রেইনের সরকারি বাহিনীকেই দায়ী করেছেন এক টুইট বার্তায়।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক এক টুইট বার্তায় বলেছেন, “এ খবরে আমি স্তম্ভিত। যতো দ্রূত সম্ভব আমরা একটি তদন্ত শুরু করছি।”
মাত্র চার মাস আগে, গত ৮ মার্চ মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের আরেকটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে উধাও হয়ে যায়। ব্যাপক আন্তর্জাতিক চেষ্টার পরও বিমানটির কোনো হদিস এখনো পাওয়া যায়নি।