‘নেতৃত্ব দিন, নয়ত সরে দাঁড়ান’: পদত্যাগের চাপে জনসন

লকডাউনের বিধি ভঙ্গ করে ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিক পার্টি আয়োজনের কথা প্রকাশ্যে আসার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগের দাবি জোরাল হচ্ছে। জনসনের ওপর চটেছেন তার নিজ দলের এমপিরাই।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 04:43 PM
Updated : 16 Jan 2022, 08:32 PM

জনসন পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির ঊধ্র্বতন এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী টোবিয়াস এলউড বিবিসি-কে বলেছেন, “বরিস জনসনকে হয় নেতৃত্ব দিতে হবে, নয়ত সরে যেতে হবে। আমাদের এখন নেতৃত্ব প্রয়োজন।”

জনসনের পদত্যাগ দাবি করা কনজারভেটিভ এমপি’র সংখ্যা বাড়ছে। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার খবর অনুযায়ী, জনসনের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি জমা দিয়েছেন অন্তত ২০ জন কনজারভেটিভ এমপি। যদিও অনাস্থা ভোটভুটিতে যাওয়ার জন্য এই সংখ্যা এখনও প্রয়োজনীয় ৫৪’র থেকে কম।

শতাধিক স্থানীয় ভোটার এমপি’দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করার পর জনসনকে নিয়ে বিবিসি তে ওেই কড়া কথা বলেন টোবিয়াস এলউড। তবে ব্রিটিশ সরকার পার্টি কেলেঙ্কারির ঘটনায় জ্যেষ্ঠ বিচারক স্যু গ্রে’র তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও রায় না দিতে জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে।

কিন্তু নর্থ-ওয়েস্ট লিস্টারশায়ারের কনজারভেটিভ পার্টির এমপি অ্যান্ড্রু ব্রাইজেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “স্যু গ্রে কী বলবেন তা জানার জন্য আমি অপেক্ষা করে বসে থাকব না। আমার মতে, জনসন দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিচক্ষণতা হারিয়েছেন।”

অ্যান্ড্রু ব্রাইজেন পঞ্চম কনজারভেটিভ এমপি, যিনি ‘১৯২২ কমিটির’ চেয়ারম্যানকে জনসনের প্রতি এমপি’দের অনাস্থার বিষয়টি লিখিতভাবে জানানোর কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছেন।

জনসন ২০২০ সালে লকডাউনের মধ্যে মদপানের পার্টিতে উপস্থিত থাকা নিয়ে শোরগোলের মুখে ক্ষমা চাওয়ার পরই সামনে আসে আরেক পার্টি কেলেঙ্কারির ঘটনা।

 ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, গতবছর ১৬ এপ্রিলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান থাকার সময়ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে কর্মীরা আরও দুটো মদের পার্টি করেছিলেন।

ওই সময়ও বদ্ধ জায়গায় জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে তখন চলছিল জাতীয় শোক এবং পরেরদিন (১৭ এপ্রিল) ছিল ফিলিপের শেষকৃত্য।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সেই পার্টিতে উপস্থিত না থাকলেও জাতীয় শোক দিবস এবং জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে এমন পার্টির কারণে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। বার বার ক্ষমা চেয়েও তিনি রেহাই পাচ্ছেন না।

সর্বশেষ জনসনের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন কনজারভেটিভ এমপি টিম হাটন। সাবেক শিশু বিষয়ক এই মন্ত্রী বলেছেন, জনসনের অবস্থান এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে।

আরেক ঊর্ধ্বতন কনজারভেটিভ এমপি বিবিসি-কে বলেছেন, ডাউনিং স্ট্রিটে মদের পার্টি চলা নিয়ে তারা ২শ’র বেশি ক্ষুব্ধ ইমেইল পেয়েছেন। তিনি বলেন, “অনেক সহকর্মীই এখন বিশ্বাস করেন যে, বরিস জনসন আগামী সাধারণ নির্বাচনে নেতা হতে পারবেন না।”