যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বিবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মার্কিন সেনারা ভবিষ্যতে আবার আফগানিস্তানে ফিরে যাবে।
Published : 06 Sep 2021, 07:27 PM
“কারণ, সন্ত্রাসের হুমকি এতটাই বড় হয়ে দেখা দেবে যে, আমাদেরকে আবার ফিরে যেতেই হবে,” বলেন তিনি।
আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের পর গত ৩১ অগাস্টে সেখান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু শেষ মার্কিন সেনাটি আফগানিস্তান ছাড়ার আগেই রাজধানী কাবুলের দখল চলে গেছে কট্টরপন্থি ইসলামি গোষ্ঠী তালেবানের হাতে।
তবে কাবুলের পতন হলেও আফগানিস্তানে সংঘাত এখনও চলছে। দেশটির পানশির প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্রমাগতই পাল্টাপাল্টি দাবি করে যাচ্ছে তালেবান এবং তাদের প্রতিপক্ষ এনআরএফ বিদ্রোহীরা।
পানশিরের লড়াই ঘিরে আফগানিস্তানে ভবিষ্যতে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা এরই মধ্যে প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলি।
আর গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সেখানে আবার আল কায়েদা এবং আইএস এর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন মিলি।
এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোসহ ওই অঞ্চলে অন্যান্য আরও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্ম ও বিস্তার ঘটলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও এদের হামলার হুমকির মুখে অনিরাপদ হয়ে উঠবে।
তালেবান অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে চুক্তিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আফগানিস্তানের মাটিকে বিদেশে হামলার জন্য ব্যবহার হতে না দেওয়ার। কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি কতটা রক্ষা করতে পারেবে তা নিয়ে সংশয় আছে।
তালেবান এবার কাবুল দখলের পর থেকেই নারী অধিকার এবং মানুষের অবাধে চলাফেরার অধিকারসহ কিছু ক্ষেত্রে উদার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের দেওয়া আশ্বাস নিয়ে দেশের ভেতরে এবং বাইরে অনেকেই সন্দিহান।
তছাড়া, তালেবান শান্তির বার্তা দিয়েও বরাবরই বলে এসেছে শরিয়া আইন মতোই সব চলবে। মুখে তালেবান ভাল কথা বললেও মাঠ পর্যায়ে নিরীহ মানুষের ওপর তাদের অত্যাচারের ভিন্ন পরিস্থিতিই নজরে আসছে।
সরকার গঠন নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মতো নেতাদের সঙ্গে তালেবান আলোচনা চালাচ্ছে। কিন্তু নতুন সরকার ব্যবস্থায় তারা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীপদগুলোতে প্রবীণ যেসব তালেবান কমান্ডার নিয়োগ করেছে তাতে সরকারে তাদের উদার দৃষ্টিভঙ্গি কতটা থাকবে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ।
তালেবান সরকার এখন কেমন হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছে বিশ্ব। আর আফগানদেরও অনেকেই এখনও তালেবানকে নিয়ে সংশয়ে আছে।