কাবুলে বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০

কাবুল বিমানবন্দরের কাছে ‘আত্মঘাতী’ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০ এ দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2021, 03:29 AM
Updated : 27 August 2021, 04:07 AM

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণে আহতও দেড়শ ছাড়িয়েছে, নাম পরিচয় জানাতে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

তালেবানের কাবুল দখলের পর কূটনীতিক, বিদেশি নাগরিক ও অসংখ্য আফগানের দেশ ছাড়ার তোড়জোড়ের মধ্যে এ প্রাণঘাতী হামলা হল।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে।

এতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

নাম পরিচয় প্রকাশে রাজি না হওয়া তালেবান এক কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবারের বোমা হামলায় তাদের অন্তত ২৮ সদস্য নিহত হয়েছে।

“যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় আমরা বেশি লোক হারিয়েছি,” বলেছেন তিনি।

তবে এ ‘আত্মঘাতী’ বোমা হামলার পরও যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান থেকে সরে যেতে এবং কূটনীতিক, বিদেশি নাগরিক ও তাদের সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার সময়সীমা ৩১ অগাস্ট থেকে বাড়ানোর দরকার নেই বলে মত এ তালেবান কর্মকর্তার।

কাবুল বিমানবন্দরে আইএস এর আঞ্চলিক সহযোগী আইএসআইএস খোরাসানের সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে সতর্কতা জারি করেছিল পশ্চিমা দেশগুলো। বৃহস্পতিবার ওই সতর্কবার্তায় নাগরিকদের এলাকাটি এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে।

বিবিসি জানিয়েছে, বিমানবন্দরের সীমানার কাছেই ব্যারন হোটেলের গেইটে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে।

যুক্তরাজ্যের তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ নাগরিকদের পাশাপাশি আফগানদের মধ্যে কাদের সরিয়ে নেওয়া হবে, তা বাছাইয়ে কাজ চলছিল ওই হোটেলে।

বিস্ফোরণের পর সেখানে গুলির শব্দ শোনা যায়। এর পরপরই বিমানবন্দরের অ্যাবি গেইটের কাছে ঘটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ।

স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবি গেইটের বাইরে কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য দিয়ে সেখানে একটি নালার পাশে অপেক্ষা করছিলেন বহু আফগান। বিস্ফোরণে ধাক্কায় তাদের অনেকের দেহ নালায় গিয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সৈন্যরা বিমানবন্দরের ওই গেইটের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। একজন মার্কিন কর্মকর্তারা বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সেখানে অন্তত একজন হামলারকারীর গায়ে এক্সপ্লোসিভ ভেস্ট ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেছেন, অ্যাবি গেইটের কাছে বিস্ফোরণের পর হামলাকারীদের একজন ভিড়ের মধ্যে গুলিও চালিয়েছে। সেখানে অবস্থানরত তালেবান যোদ্ধারা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে বলেও কেউ কেউ দাবি করেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে টেলিগ্রামে আইএস এর মুখপত্র আমাক নিউজ এজেন্সির এক বার্তায় কাবুল বিমানবন্দরের হামলা তাদেরই কাজ বলে দাবি করা হয়।

সেখানে বলা হয়, আইএস এর একজন আত্মঘাতী যোদ্ধা ব্যারন ক্যাম্পের পাশে একদল দোভাষীর ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়তে সক্ষম হয় এবং শরীরে থাকা বোমার বেল্টে বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পেন্টাগনকে কাবুলে হামলার পাল্টায় কি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার পরিকল্পনা করতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন