তিউনিসিয়ায় সংকটে গণতন্ত্র, ৩০ দিনের কারফিউ

সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা, সরকার ভেঙে দেওয়া এবং পার্লামেন্ট স্থগিত করার যেসব পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কায়িস সায়িদ নিয়েছেন, তাতে এক দশকের মধ্যে তিউনিসিয়ার গণতন্ত্র চরম সংকটে পড়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2021, 02:34 PM
Updated : 27 July 2021, 02:34 PM

প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে সামরিক অভ্যুত্থান আখ্যা দিয়েছে তিউনিসিয়ার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। এর মধ্যেই ক্ষমতা আরও সুসংহত করতে সোমবার এক মাসব্যাপী কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছেন কায়িস।

‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা জানায়, মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) থেকে একমাস দেশজুড়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে। একইসঙ্গে জনসমাগম এলাকাগুলোতে তিনজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে ঘোষণায়।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগে দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার জেরে গত রোববার প্রেসিডেন্ট কায়িস বরখাস্ত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। পরবর্তী ৩০ দিনের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিত করেন তিনি।

পার্লামেন্টের স্পিকার রাশেদ ঘানৌশি এরপর প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপকে ‘অভ্যুত্থান’ অভিহিত করে তা প্রতিহত করতে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। এতে দেশজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাস্তায় রাস্তায় সংঘর্ষ চলছে।

সায়িদের সমালোচকরা বলছেন, তিনি ২০১১ সালের আরব বসন্তের পর চালু হওয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। দেশজুড়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে সায়িদ সোমবার কোভিড বিধিনিষেধ আরও সম্প্রসারণ করেছেন এবং কোনওরকম সহিংসতা বল প্রয়োগ করে মোকাবেলার হুমকি দিয়েছেন।

অভ্যুত্থান ঘটানোর অভিযোগও কায়িস নাকচ করেছেন। জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উস্কানিতে সাড়া দিতে বারণ করে জনগণকে রাস্তা না নামারও আহ্বান জানিয়েছেন কায়িস।

কয়েক বছর ধরে চলা অচলাবস্থা, ক্রমহ্রাসমান রাষ্ট্রীয় পরিষেবা ও বাড়তে থাকা বেকারত্বের কারণে ইতোমধ্যেই অনেক তিউনিসীয় তাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ছিল। এরপর গত বছর কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর দেশটির অর্থনীতি টালমাটাল হয়ে ওঠে এবং চলতি গ্রীষ্মে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার বাড়তে শুরু করে।

এ পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভের ডাক দেয়। কোনো রাজনৈতিক দল তাতে সমর্থন না দিলেও রোববার তুনিসে ও অন্যান্য শহরে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তাদের ক্ষোভের প্রধান লক্ষ্য ছিল পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল ইসলামপন্থি এন্নাহদা পার্টি।