গাজা-ইসরায়েল আরও সহিংসতা, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি হামাস যোদ্ধাদের চলমান লড়াইয়ের মধ্যে তুমুল পাল্টাপাল্টি হামলায় গাজা এবং ইসরায়েলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2021, 04:31 PM
Updated : 11 May 2021, 05:18 PM

সোমবার রাতভর সহিংসতার পর তা মঙ্গলবারেও গড়িয়েছে। গোটা অঞ্চলজুড়েই শোনা গেছে ফিলিস্তিনের রকেট নিক্ষেপ আর ইসরায়েলের বিমান হামলা চালানোর শব্দ।

বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার ভোরের দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় আসকেলোন শহরে ফিলিস্তিনিদের ছোড়া রকেটের আঘাতে একটি পরিবারের কয়েকজন আহত হয় এবং এদিন বিকালেই চিকিৎসাকর্মীরা একই শহরে রকেট হামলায় দুই নারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে।

গাজার হামাস যোদ্ধারা কাছাকাছি আসদোদ শহরে ৫ মিনিটে অন্তত ১৩৭ টি রকেট ছোড়ার কথা জানিয়েছে। লড়াই চলতে থাকলে সামনে ‘আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছে’ বলেও তারা হুঁশিয়ার করেছে।

হামাস এই রকেটগুলো ছোড়ার আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, সোমবার সন্ধ্যা থেকে হামাস ৪শ’র বেশি রকেট ছুড়েছে। এর জবাবে ইসরায়েল গাজার ১৩০ টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বিবিসি কে বলেছেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের আগ্রাসী হামলার জবাবে আমরা তাদের ওপর আঘাত হানতেই থাকব।”

গাজার আরও ১৫০ টি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় ১০ শিশুসহ ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫০ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই লড়াই শুরু হয় চলতি সপ্তাহের শুরুতে জেরুজালেমের আল-আকসায় দুপক্ষের মধ্যকার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। গত কয়েক বছরের মধ্যে দুপক্ষে এটিই সবচেয়ে বড় সংঘাতের ঘটনা।

হামাস বলছে, তারা আল আকসা মসজিদকে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ এবং ‘সন্ত্রাস’ থেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে। ওদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, হামাস জেরুজালেমের দিকে রকেট ছুড়ে শেষ সীমা (রেড লাইন) অতিক্রম করেছে।

মঙ্গলবার সামরিক প্রধানদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তারা গাজায় আরও বেশি শক্তি প্রয়োগ করে হামলা আরও বাড়িয়ে দিতে একমত হয়েছেন। হামাসকে এমনভাবে আঘাত করা হবে যে তারা তা কল্পনাও করতে পারবে না।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দুপক্ষকে অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন অবিলম্বে হামাসকে রকেট হামলা বন্ধ করতে বলে সব পক্ষকে যুদ্ধংদেহী অবস্থান থেকে সরে আসতে বলেছেন। একই আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবও।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বরেলের মুখপাত্রও সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ হওয়ার দরকার বলে মন্তব্য করেছেন। ওদিকে, জাতিসংঘের মানমাধিকার কার্যালয় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সহিংসতা বাড়তে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার জরুরি বৈঠকও করেছে। তবে কোনও বিবৃতি ইস্যু করেনি।  জাতিসংঘ, মিশর এবং কাতার আলোচনার মাধ্যমে লড়াইয়ের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করছে বলে রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।