পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী সহিংসতা ১৭ প্রাণ কেড়েছে, দাবি দলগুলোর

ভারতে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে। গত রোববার থেকে সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2021, 01:19 PM
Updated : 5 May 2021, 01:19 PM

বিবিসি জানায়, নিহতরা তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি (টিএমসি) এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র কর্মী বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিধানসভা নির্বাচনের ফলে তৃণমূল তৃতীয়বারের মতো বিপুল জয় নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তবে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা এবং কী নিয়ে সহিংসতা হল সে বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি।

তৃণমূল, বিজেপি এবং বাম দলগুলোর জোটও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য পাল্টপাল্টি দোষারোপ করেছে

বিজেপি তাদের দলের সদস্যদের ওপর তৃণমূলের কর্মীদের হামলার অভিযোগ করেছে। বিজেপি’র কার্যালয় ভাঙচুর এমনকী বিজেপি কর্মীদের দোকানপাটও তৃণমূল কর্মীরা লুট করেছে এবং সহিংসতায় ৯ বিজেপি কর্মী নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

বাম দলগুলোও সহিংসতার জন্য তৃণমূলকে দুষেছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং সহিংসতায় নিজ দলের সাতজন কর্মী মারা গেছে বলে জানিয়েছে।

রাজ্যজুড়ে কয়েকটি জেলা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় সহিংসতার একাধিক খবর আসায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে তৃণমূল নেতারা এ সমস্ত খবর ভুয়া বলে দাবি করেছেন এবং বিজেপি এসব খবর ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

ওদিকে, বিজেপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার অভিযোগ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি, তদন্ত দাবি:

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় হস্তক্ষেপ চেয়ে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র আইনজীবী গৌরব ভাটিয়া।

আবেদনে সহিংসতা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে সহিংসতার বিস্তারিত রিপোর্ট এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। এরপরই বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গের এই ঘটনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রতীকী ধর্না কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

তাছাড়া, রাজনৈতিক সহিংসতার বলি দলীয় কর্মীদের দেখতে মঙ্গলবার দু'দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।

বিজেপি’র সাবেক জেলা পর্যায়ের এক নেতা বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, “তৃণমূলের কর্মীদের ভয়ে বহু পার্টি কর্মীই জীবন বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।”

সংযত থাকার আহ্বান মমতার:

তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকজনকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অনুসারীদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তিনি। বুধবার শপথ নিয়েছেন মমতা।

পশ্চিমবঙ্গে এবারের নির্বাচনে মূল লড়াই জমে উঠেছিল তৃণমূল এবং বিজেপি’র মধ্যে। বাংলার দখল নিতে উঠেপড়ে লেগেছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে সেখানে দলের নির্বাচনী প্রচারে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। মোদী-মমতার কথার লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভোটের প্রচার জমজমাট হয়ে উঠেছিল।

এই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভোটের প্রেক্ষাপট রাজ্যটিতে ভোট-পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যেখানে মোদী স্বয়ং প্রচার চালানোর পরও অনায়েসে জিত হয়েছে মমতার।