ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার প্রশ্নে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ভোট

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হবে কিনা সে প্রশ্নে পাকিস্তান সরকার পার্লামেন্টে ভোট আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে। এরপরই নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামপন্থি দল টিএলপি পাকিস্তান জুড়ে বিক্ষোভ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 21 April 2021, 05:41 PM
Updated : 21 April 2021, 05:41 PM

ফ্রান্সে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর কার্টুন প্রদর্শনের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ ও জ্বালাপোড়াও শুরু করেছিল কট্টর ইসলামপন্থি দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)। পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে কয়েকজন নিহতও হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তানে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের বহিষ্কার চেয়ে সরকারকে চাপ দিতে দেশটির বিভিন্ন মহাসড়ক, রেলওয়ে এবং বড় বড় নগরীতে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয়। পুলিশের উপর এবং সরকারি ভবনগুলোতেও হামলায় চালায়।

যার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে গত সপ্তাহে পাকিস্তান সরকার টিএলপি কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং গত ১২ এপ্রিল দলটির নেতাকে গ্রেপ্তার করে।

প্রধান নেতা গ্রেপ্তারের পর টিএলপি সমর্থেকরা আরও জোরদার আন্দোলন শুরু করে। তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। আহত হন চারশর বেশি পুলিশ, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

এছাড়া টিএলপি সমর্থকরা ১১ পুলিশ কর্মকর্তাকে জিম্মি করে। টিএলপি সংঘর্ষে তাদের তিন সদস্য নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে।

সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি তারা ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করেন তবে পাকিস্তানকে তার মূল্য দিতে হবে।

পাকিস্তানের রাপ্তানির পণ্যের অর্ধেকের বেশি বিক্রি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে।

এ নিয়ে টিএলপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের কয়েক দফায় আলোচনাও হয়েছে। এবার কট্টর ইসলামপন্থি এ দলটিকে তুষ্ট করার চেষ্টাতেই সরকার পার্লামেন্টে ভোটের পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

‘টিএলপির সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর’ সরকার ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা পার্লামেন্টে উপস্থাপন করতে রাজি হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমদ।

এছাড়া, বিক্ষোভ বন্ধ করার বিনিময়ে সরকার টিএলপির বিরুদ্ধে করা সব ফৌজদারি মামলা তুলে নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এক অডিও বার্তায় টিএলপির মুখপাত্র শফিক আমিনি বলেন, ‘‘দেশজুড়ে যেখানেই যে ধরনের আন্দোলন চলছে সব বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

যদিও লাহোরে এখনও আন্দোলন বন্ধ করার কোনও নমুনা দেখা যায়নি। পাকিস্তানের এই শহরেই টিএলপির প্রধান কার্যালয় এবং কার্যালয়ের বাইরে মঙ্গলবারও হাজারো টিএলপি অনুসারী ভিড় করে ছিলেন।

এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পার্লামেন্টের এক বিশেষ অধিবেশনে ফ্রান্সের দূতকে বহিষ্কারের বিষয়ে বিতর্কের জন্য একটি রেজ্যুলেশন উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিরোধীদলগুলো যার তীব্র বিরোধিতা করে টিএলপির সঙ্গে সরকারের চুক্তির পুরোটা প্রকাশ্যে আনার ‍দাবি জানিয়েছে।