বিবিসি জানায়, শনিবার কাতারে রাজধানী দোহায় দুই পক্ষের মধ্যে এ বৈঠক শুরু হয়েছে। বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দোহায় উড়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি এই বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
ওই চুক্তির পরপরই আফগান সরকার ও তালেবানকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে তালেবান তাদের কারাবন্দি প্রায় পাঁচ হাজার সদস্যকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। যাতে মোটেও রাজি ছিলেন না আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। তাই শুরুতে তিনি তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে চাননি।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত চার দশক ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে গত অগাস্টে আফগান আইনসভা ‘লয়া জিরগা’ তালেবান বন্দিদের মুক্তির অনুমোদন দেয়।
প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অগাস্টেই তালেবান কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়াদের মধ্যে আফগান ও বিদেশিদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত হওয়া তালেবান সদস্যরাও ছিল।
১৯ বছর আগে ঠিক এই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ বিমান হামলা চালানো হযেছিল। যার ফলশ্রুতিতে জঙ্গিদল আল কায়েদাকে ধ্বংস করতে আফগানিস্তানে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এ অভিযানে দেশটিতে তালেবান শাসনের অবসান হয়।
দোহায় রওয়ানা হওয়ার সময় আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা ন্যায়সম্মত সম্মানজনক শান্তি চুক্তি চাই।”
এটিই আফগান সরকারের প্রতিনিধি ও তালেবান প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে। এতদিন তালেবান দেশটির সরকারকে ‘ক্ষমতাহীন’ ও ‘আমেরিকার হাতের পুতুল’ বলে বর্ণনা করে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। উভয় পক্ষই এখন রাজনৈতিক পুনর্মিলনের মাধ্যমে দেশে শান্তি ফেরাতে চাইছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির পর মার্চেই এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তালেবান কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে মতবিরোধে সেটা আর সম্ভব হয়নি। তালেবান নেতারা তাদের একজন সদস্যও কারাগারে থাকা অবস্থায় এই বৈঠকে বসবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল।