হংকংয়ে করোনাভাইরাস রোগীদের নির্ধারিত ভবনে আগুন

হংকংয়ে একদল বিক্ষোভকারী নতুন গড়ে তোলা একটি আবাসিক ভবনে আগুন দিয়েছে।কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস আক্রান্তদেরকে পৃথক করে রাখার স্থাপনা হিসাবে এ ভবনটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 03:58 PM
Updated : 26 Jan 2020, 03:58 PM

রোববার রয়টার্সের এক সাংবাদিক কালো পোশাক এবং মুখোশ পরা কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে চীন সীমান্তের কাছে ফ্যানলিং এলাকার ওই পাবলিক হাউজিং ব্লকে দৌড়ে গিয়ে একটি ককটেইল জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখেছেন।

এরপরই ভবন থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায় এবং ফায়ার এলার্ম বাজতে শোনা যায়।ভবনের জানালাগুলোও ভেঙে গেছে।দমকলকর্মীরা পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়েছে।আগুনে ভবনের প্রবেশপথের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ঘটনাস্থলে গেছে শত শত দাঙ্গা পুলিশ এবং এ ঘটনায় অন্তত একজন আটক হয়েছে।

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্ক বাড়তে থাকায় চীনা মূল ভূখন্ডের সঙ্গে হংকং সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে।

রোববার হংকংয়ের শত শত নাগরিক ওই ভবন অভিমুখী রাস্তা ইট ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে আটকিয়ে রেখে বিক্ষোভ করেছে। ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় নাগরিকরা একটি আবাসিক এলাকার কাছের ওই ভবনকে ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদেরকে রাখার স্থান হিসাবে ব্যবহার করতে দেওয়ার বিরোধিতা করছে।

স্থানীয় এক অধিবাসীর উক্তি,“ সরকার ভাইরাস আক্রান্তদেরকে আলাদা করে রাখার জন্য এই হাউজিং এস্টেটকে বেছে নেওয়ায় আমরা অসন্তুষ্ট। কারণ, এ ভবনটি একটি আবাসিক এলাকা এবং একটি প্রাথমিক স্কুলের খুবই কাছে।”

হংকংয়ে ৭ মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম নেত্রী ক্যারি লাম এবার জনস্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন।

হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা তাদের ওপর চীনের হস্তক্ষেপ বাড়তে থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ। তার মধ্যে এখন চীনের উহান থেকে নতুন করোনাভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি হংকং কর্তৃপক্ষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে হংকংয়ের নেত্রী ক্যারি লাম জরুরি অবস্থা ঘোষণা করাসহ চীনে সবধরনের সরকারি সফর বাতিল এবং উহানের সঙ্গে পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ করলেও চীনা মূল ভূখন্ড থেকে লোকজনের হংকংয়ে আসা বন্ধ করেননি। চীনের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করাটা বাস্তবসম্মত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন লাম।

একইসঙ্গে জনগণের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষায় হংকংয়ের সব নাগরিককে নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঐক্যব্ধ থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত বছরের শেষ দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শহর উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে, যেখানে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বিক্রি করা হয়, ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব চীনের রাজধানী বেইজিং, বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

হংকংয়ে গত বুধবার প্রথম উহান থেকে দ্রুত গতির ট্রেনে শেনঝেন হয়ে আসা একজনের দেহে ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর এ সংখ্যা বেড়েছে। সংক্রমণ ধরা পড়াদের মধ্যে একজনের অবস্থা শনিবার খারাপও হয়ে পড়ে।