শ্রীলঙ্কায় এক বছরে রেকর্ড সংখ্যক হাতির মৃত্যু

গত বছর শ্রীলঙ্কায় ৩৬১টি হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2020, 07:17 AM
Updated : 12 Jan 2020, 07:20 AM

১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর থেকে কোনো বছরই ২০১৯ সালের মতো এতো সংখ্যক হাতির মৃত্যু রেকর্ড হয়নি বলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবাদীদের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি।

গত বছর যেসব হাতির মৃত্যু হয়েছে তাদের অধিকাংশই মানুষের হাতে নিহত হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় বন্য অবস্থায় সাত হাজার ৫০০ হাতি আছে, হিসাব এমনটিই বলছে। আইনে এসব হাতি হত্যা অবৈধ হলেও প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামগুলোতে চড়াও হওয়া হাতির সঙ্গে প্রায়ই গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ বেধে যায়।

শ্রীলঙ্কায় হাতিকে ব্যাপক সম্মানের চোখে দেখা হয়, কিন্তু তারপরও কিছু কৃষক হাতিদের ফসলের ক্ষতিকারক প্রাণী হিসেবেই বিবেচনা করেন। 

শ্রীলঙ্কার ভূমি ও কৃষি সংস্কার আন্দোলনের কর্মী প্রাণী সংক্ষণবিদ সজীবা চামিকারা বিবিসিকে জানান, গত বছর যতো হাতির মৃত্যু হয়েছে তার ৮৫ ভাগ সম্ভবত মানুষের তৎপরতার কারণে মারা গেছে।

তিনি বলেন, গ্রামগুলোতে হাতি প্রতিরোধ করার জন্য বৈদ্যুতিক বেড়া ব্যবহার করা হয়, হাতি মারার জন্য গ্রামবাসীরা খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে রাখে অথবা খাবারের ভিতরে বিস্ফোরক ঢুকিয়ে রাখে।

সেপ্টেম্বরে একটি অভয়ারণ্যে সাতটি হাতিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ফসলের ক্ষতি করায় স্থানীয় বাসিন্দারা এদের বিষ দিয়ে মেরেছে বলে সন্দেহ বন কর্মকর্তাদের।

বিবিসি ওয়াল্ড সার্ভিস দক্ষিণ এশিয়ার সম্পাদক আনবারাসান ইতিরাজন জানান, গ্রামের সীমা ও কৃষি জমির পরিমাণ বাড়ানো অব্যাহত থাকায় বন্যপ্রাণীদের খাবার ও পানির উৎসের সংকট দেখা দিয়েছে।

কর্মকর্তারা স্থানীয় গ্রামীণ জনপদ ও হাতিদের আবাসস্থলের মধ্যে বেড়া তৈরি করে সমস্যা সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কিন্তু চামিকারা মনে করেন, অভয়ারণ্যগুলোর সুরক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে সরকারের উচিত আরও পদক্ষেপ নেওয়া।

“আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো পরিবেশবান্ধব নয়। আমাদের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া দরকার,” বলেন তিনি। 

তিনি জানান, হাতির দল এক অভয়ারণ্য থেকে আরেক অভয়ারণ্যে যাওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায়ও অনেক হাতির মৃত্যু হয়। এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক কারণে মৃত্যু তো আছেই।