অভিশংসন তদন্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পের

চলতি সপ্তাহেই হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে ইউক্রেইন সংক্রান্ত নথিপত্র তলব করা হবে, কংগ্রেসনাল কমিটির ডেমোক্রেট প্রধানদের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2019, 08:01 AM
Updated : 3 Oct 2019, 08:39 AM

ডেমোক্রেট নেতাদের কড়া ভাষায় আক্রমণের পাশাপাশি তিনি তাদের অসৎ ও রাষ্ট্রদ্রোহী বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ডেমোক্রেটরা কংগ্রেসনাল কমিটি অভিশংসন তদন্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তা সম্পন্নের অঙ্গীকার করেছেন।

কংগ্রেসনাল কমিটিগুলো হোয়াইট হাউসের কাছে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ইউক্রেইনের যোগাযোগ ও সম্পর্ক সংক্রান্ত নথিপত্র চাইছে, যাকে কেন্দ্র করেই এখন অভিশংসন তদন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে।

জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ নিয়ে এক হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগের সূত্রেই এ তদন্ত শুরু হয়।

ওই ফোনালাপে ট্রাম্প সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের দুর্নীতি তদন্তে জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন বলে পরে মার্কিন প্রশাসনের প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে।

২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা বাইডেন ও ইউক্রেইনের একটি গ্যাস কোম্পানির হয়ে কাজ করা হান্টার সংক্রান্ত কোনো অন্যায়ের তথ্য এখনো আলোর মুখ দেখেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

২৫ জুলাইয়ের ওই ফোনালাপের কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প ইউক্রেইনে ৪০ কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা আটকে দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ব্যক্তিগত লাভ নিশ্চিত করতেই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট এমনটা করেছিলেন বলে অভিযোগ সমালোচকদের।

জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি তোলার কথা স্বীকার করলেও দরকষাকষির জন্য সামরিক সহায়তা আটকে দেয়ার কথা ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন। জুলাইয়ে আটকে দিলেও মার্কিন প্রশাসন পরে ওই সহায়তার অর্থ ছাড় করে।

বুধবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সউলি নিনিস্তোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনেও ট্রাম্প বাইডেন ও তার ছেলেকে ‘ভয়াবহ দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।

কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট চেয়ারম্যান অ্যাডাম স্কিফকে ‘চতুর’ অ্যাখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত বলেও ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন।

“সত্যিকার অর্থে, তাদের (কংগ্রেসনাল কমিটি) উচিত  তার (স্কিফ) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ খতিয়ে দেখা,” বলেছেন তিনি।

হুইসেলব্লোয়ারের অভিযোগ লেখায় স্কিফ সহায়তা করেছিলেন, এমন ধারণার কথাও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যদিও এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ দেননি তিনি।

তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, কেবলমাত্র ‘আইনসম্মত’ হুইসেলব্লোয়ারদেরই সুরক্ষা দেয়া উচিত।

“কে এই ব্যক্তি, তা খুঁজে বের করা উচিত। আমার মতে, এই ব্যক্তি একজন গুপ্তচর,” বলেছেন তিনি।

অভিশংসন তদন্তকে ‘ধাপ্পাবাজি’ ও ‘মার্কিন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া জালিয়াতি’ অ্যাখ্যা দিলেও কংগ্রেসকে ‘সবসময়ই সহায়তা করারও’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

এর আগে টুইটারেও স্কিফ ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে একহাত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ডেমোক্রেটরা ‘আবোলতাবোল’ বিষয়ে নজর দিচ্ছে অভিযোগ করে পেলোসিকে তার নিজের শহর সান ফ্রান্সিসকোর দিকে বেশি মনোযোগ দিতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শহরটিতে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি সানফ্রান্সিসকো ‘তাঁবুর শহর’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন।