মেক্সিকো সীমান্তবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের এল পাসোর ওই হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ২১ বছর বয়সী এক শ্বেতাঙ্গ তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই তরুণ অনলাইনে পোস্ট করা এক নথিতে এই হামলাকে ‘টেক্সাসে হিস্পানিক আক্রমণ’ এর জবাব হিসেবে অভিহিত করেছেন বলে ধারণা তদন্তকারীদের, জানিয়েছে বিবিসি।
তার বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণির খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে; এর অর্থ হচ্ছে বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
এল পাসোর এই হামলার ১৩ ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে ডেটনে আরেকটি নির্বিচার গুলিবর্ষণের ঘটনায় বন্দুকধারীর বোনসহ নয় জন নিহত হন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “আমাদের দেশে ঘৃণার কোনো স্থান নেই, আমরা এ বিষয়টিতে নজর দিতে যাচ্ছি। আমাদের দেশে বহু বছর ধরে এটি চলছে, বছরের পর বছর ধরে চলছে আর এটি আমাদের থামাতে হবে।”
উভয় হামলাকারীই ‘মানসিক অসুস্থতার সমস্যায়’ ভুগছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
“উভয় ঘটনা যাচাই করলেই বোঝা যায় এগুলো মানসিক অসুস্থতা। এরা সেই সব মানুষ যারা মানসিকভাবে খুব, খুব গুরুতর অসুস্থ,” বলেন তিনি।
ট্রাম্প এমন কথা বললেও সমালোচকরা বলছেন, এই দুই হামলার মূল প্রোথিত আছে অভিবাসী বিশেষ করে মেক্সিকান অভিবাসীদের নিয়ে প্রেসিডেন্টের করা মন্তব্যের মধ্যে ও বন্দুক নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তার বিরোধিতার মধ্যে।
শনিবার এল পাসোয় ওয়ালমার্টের জনাকীর্ণ শোরুমে বন্দুকধারী তার আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণের পর শোরুমের বাইরে তাকে ঘিরে ফেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
এই গুলিবর্ষণের ঘটনায় আরও ২৬ জন আহত হন।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে টেক্সাসের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোর অ্যাটর্নি জন ব্যাশ বলেন, “এটিকে আমরা অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদের ঘটনা হিসেবে দেখছি।”
হামলাটি ‘বেসামরিক জনগণকে ভয় দেখানোর মতো করে পরিকল্পনা করা হয়েছে’, এমনটি মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হামলাকারীর নাম প্যাট্রিক ক্রুসিয়াস, সে এল পাসো থেকে ১০৪৬ কিলোমিটার পূর্বে ডালাস শহরের অ্যালেন এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম।
হামলার কতোক্ষণ আগে সে এল পাসোতে গিয়েছিল তা পরিষ্কার হয়নি।
ওয়ালমার্ট থেকে পুলিশ জরুরি কল পাওয়ার প্রায় ২০ মিনিট আগে কট্টর ডানপন্থিরা নিয়মিত ব্যবহার করে এমন একটি অনলাইন ম্যাসেজ বোর্ড ‘এইটচান’ এ ক্রুসিয়াস তার লেখা চার পৃষ্ঠার একটি নথি পোস্ট করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই নথিতে যুক্তরাষ্ট্রে হিস্পানিক জনগোষ্ঠী ‘আক্রমণের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ও জাতিগত প্রতিস্থাপন ঘটাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ওই নথিতে মার্চে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে এক বন্দুকধারীর গুলিতে ৫১ জনকে হত্যার ঘটনাটির প্রতিও সমর্থন জানানো হয়েছে।
হামলাকারী তদন্তে সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। একাই হামলাটি চালিয়েছে, পুলিশকে সে এমনটি বলেছে বলে জানা গেছে।