একইসঙ্গে ফের হংকং নেতা ক্যারি লাম এবং পুলিশকে সমর্থন জানিয়ে হংকংয়ের জনগণকে সহিংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
হংকংয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের আরেকটি সপ্তাহ পেরোনোর পর সোমবার চীন এ প্রতিক্রিয়া জানাল।
চীনের হংকং বিষয়ক শীর্ষ নীতি নির্ধারণী কার্যালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটাই এ মুহূর্তে সর্বাধিক অগ্রাধিকার পাবে।
গত আট সপ্তাহ ধরেই হংকংয়ে সরকার বিরোধী ও গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ চলছে এবং দিন দিনই তা সহিংস রূপ নিচ্ছে।
শনিবার হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় ইউয়েন লং শহরে পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার পর রোববারও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।
চীনের রাজধানী বেইজিং কর্তৃপক্ষ অনেক সময়ই হংকংয়ের বিক্ষোভের নিন্দা এবং ক্যারি লামকে সমর্থন জানালেও সোমবার চীন এ বিক্ষোভ নিয়ে প্রথম তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের সরকারি অবস্থান জানান দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
চীন সরকারের হংকং ও ম্যাকাউ বিষয়ক কার্যালয় (এইচকেএমএও) এর মুখপাত্র ইয়াং গুয়াং হংকংয়ের বিক্ষোভকে ‘উগ্রবাদীদের শয়তানি এবং অপরাধ কর্মকান্ড’ বলে এর নিন্দা করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি হংকংয়ের সাধারণ জনগণকে বর্তমান পরিস্থিতির মারাত্মক ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। চীনের কেন্দ্রীয় সরকার হংকংয়ের নেতা ক্যারি লামসহ পুলিশের কঠোরভাবে আইনের শাসন প্রয়োগকে সমর্থন করে বলে জানান তিনি।
মূলত চীনের কাছে অপরাধী প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে হংকংয়ে শুরু হওয়া চীনবিরোধী বিক্ষোভ এখন হংকংয়ের স্বাধীনতার আন্দেলনে রূপ নিয়েছে। রোববারের বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীরা ‘হংকং এর মুক্তি চাই’ স্লোগান দিয়েছে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে চীনের কাছে হস্তান্তরের পর হংকংয়ের ইতিহাসে এখনই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ চলছে। চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় যুক্তরাজ্য শহরটির স্বায়ত্ত্বশাসন ও স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অটুট রাখার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছিল।
হংকংয়ের জন্য চীন ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থাপনার’ নীতি নিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাজ্যকে প্রতিশ্রুতি দিলেও নিজেদের ভূখণ্ডভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেইজিং হংকংয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কারে বাধা, স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও বিরোধীদের ওপর তুমুল দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সমালোচকদের।