বিবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামলা হতে পারে এমন সতর্কবার্তা পাওয়ার পরও গুরুত্ব না দেওয়াসহ নিজেদের দুর্বলতা অকপটে স্বীকার করে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি হতবাক এবং এখনো বুঝতে পারছেন না কেন আইএস হামলার জন্য শ্রীলঙ্কাকে বেছে নিয়েছে।
শ্রীলঙ্কাকে বেছে নেওয়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “হতে পারে তাদের (আইএস) বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই করার ক্ষমতা নেই। যে কারণে তারা নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে এমন একটি দেশ বেছে নিয়েছে যেখানে মাত্রই শান্তি ফিরেছে।”
সতর্কবার্তা পাওয়ার পরও কেন কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটি পরিষ্কার যে, গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপদে থাকা ব্যক্তিরা সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন। যদিও আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তারা তাদের দায়িত্বে অবহেলা করেছেন এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
“তাদেরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্তের জন্য আমি একটি কমিটি গঠন করেছি।”
হামলার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করছেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে সিরিসেনা বলেন, “ভয়াবহ বোমা হামলার পর কোনো রাষ্ট্রের প্রধানই পদত্যাগ করতে পারেন না বা নিজ দায়িত্ব ছেড়ে যেতে পারেন না। আমার বিশ্বাস, এখন আমার দায়িত্ব হল আইএস এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।”
গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডের দিন শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা ও চারটি অভিজাত হোটেলে একযোগে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫৯ জন নিহত হয়; আহত হয় পাঁচ শতাধিক মানুষ।
বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে শ্রীলঙ্কা পুলিশকে সতর্ক করার পরও এত বড় হামলা রুখতে প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
অনেকের মতে, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের মতবিরোধের কারণে হামলার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
একে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে সিরিসেনা বলেন, “যখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন তখন আমরা রাজনৈতিক বিরোধকে সরিয়ে রেখে একসঙ্গে কাজ করি।”