তরীটির আরোহীদেরকে নাটকীয়ভাবে উদ্ধার করার পর এটি বন্দরে ভিড়ল বলে জানিয়েছে বিবিসি। উদ্ধারকর্মীরা খারাপ আবহওয়ার মধ্যে প্রায় ৫শ’ জনকে বিমানে করে তুলে আনে।
এরপর তরীটির ইঞ্জিন আবার চালু হলে উদ্ধার কাজ বন্ধ করা হয় এবং সেটি কয়েকটি টাগ বোটের সাহায্যে ধীরে ধীরে মোল্ডে বন্দরে এসে পৌঁছে।
এর আগে উঁচু ঢেউ ও প্রবল বাতাসের মধ্যে বিকল হয়ে পড়া এমভি ভাইকিং স্কাই থেকে বিপদের বার্তা পাঠানো হয় বলে জানিয়েছিল নরওয়ের সমুদ্র উদ্ধার সংস্থা। পাঁচটি হেলিকপ্টার ও কয়েকটি জাহাজ উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ২টার দিকে সাগরে প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়ে একটি ক্রুইজ শিপের এ সংকটে পড়ার খবর প্রথম পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষ আরোহীদের তরীতে না রেখে তাদের উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তারপর উদ্ধার কাজ চলার মধ্যেই জাহাজটি একটি ইঞ্জিন চালু করতে সক্ষম হয় এবং উপকূল থেকে কিছুটা এগিয়ে আসে বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানানো হয়।
হেলিকপ্টার যোগে উদ্ধার পাওয়া জাহাজটির যাত্রী জন কারি নরওয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনআরকে-কে বলেছেন, “আমরা দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় জাহাজটি ঝাঁকুনি খেতে শুরু করে। এতে জানালার ফলকগুলো ভেঙে ভেতরে পানি ঢুকে যায়। চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল।”
তিনি বলেন, “হেলিকপ্টারে উদ্ধারের ট্রিপটি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করব আমি। ওটা কোনো মজা ছিল না।”
এর আগে ‘এত ভয়ঙ্কর কিছু দেখেননি’ বলে জানিয়েছেন উদ্ধার পাওয়া আরেক যাত্রী জ্যানেট জ্যাকব। হেলিকপ্টার যাত্রাটিও ভয়ঙ্কর ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপ্টেনপোস্টেন সংবাদপত্রকে তিনি বলেছেন, “আর একটু হলেই বিপর্যয় ঘটে যেত।” “ইঞ্জিন চালু করতে আর নোঙর বন্ধ করতে না পারলে’ জাহাজটি পাথরে ধাক্কা খেতে পারত”, বলেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ১৫৫ জন আরোহীকে তীরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। জাহাজটির আরোহীদের মধ্যে ২০ জন আহত হয়েছেন। যাত্রীদের অধিকাংশই ব্রিটিশ ও আমেরিকান।
সমুদ্র থেকে উদ্ধারে নিয়োজিত সংস্থাগুলো জানিয়েছে, জাহাজটিকে স্থির রাখা সম্ভব হয়েছে। কিছু ঢেউ ১০ মিটারেরও বেশি উঁচু বলে জানিয়েছে নরওয়ের আবহাওয়া ইনিস্টিটিউট। কিছু লাইফবোট জাহাজটির দিকে রওনা হওয়ার পর উত্তাল ঢেউয়ের কারণে ফিরে আসতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় একটি সংবাদপত্র।