উত্তাল সমুদ্রে ইঞ্জিন বিকল, সংকটে বিলাসবহুল প্রমোদতরী

নরওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে ঝড়ো আবহাওয়ার মধ্যে উত্তাল সমুদ্রে ইঞ্জিন বিকল হয়ে প্রায় এক হাজার ৩০০ আরোহীসহ সংকটে পড়েছে একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2019, 06:02 AM
Updated : 24 March 2019, 03:50 PM

ক্রুইজ শিপটির ইঞ্জিনে সমস্যা হয়েছে এবং জাহাজটির সব আরোহীকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নরওয়ের মোর অগ রমসডাল কাউন্টির পুলিশ, খবর বিবিসির।

নরওয়ের সমুদ্র উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, উঁচু ঢেউ ও প্রবল বাতাসের মধ্যে বিকল হয়ে পড়া এমভি ভাইকিং স্কাই থেকে বিপদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। 

পাঁচটি হেলিকপ্টার ও কয়েকটি জাহাজ উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

উঁচু ঢেউ ও প্রবল বাতাসের মধ্যে বিকল হয়ে পড়া এমভি ভাইকিং স্কাই থেকে বিপদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

এর মধ্যে সাগরের ওই এলাকায় হাগল্যান্ড ক্যাপ্টেন নামের একটি মালবাহী জাহাজও বিকল হয়ে পড়েছে এবং জাহাজটির ক্রুদের উদ্ধারে ওই পাঁচটির মধ্যে দুটি হেলিকপ্টার সেদিকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ২টার দিকে সাগরে প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে ইঞ্জিন বিকল হয়ে একটি ক্রুইজ শিপ সংকটে পড়েছে, এ খবর প্রথম পাওয়া যায়।

তারপর থেকে জাহাজটি একটি ইঞ্জিন চালু করতে সক্ষম হয়েছে এবং উপকূল থেকে কিছুটা এগিয়ে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে। ওই সময়ও আরোহীদের উদ্ধার করা অব্যাহত ছিল।

হেলিকপ্টার যোগে উদ্ধার পাওয়া জাহাজটির যাত্রী জন কারি নরওয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনআরকে-কে বলেছেন, “আমরা দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় জাহাজটি ঝাঁকুনি খেতে শুরু করে। এতে জানালার ফলকগুলো ভেঙে ভেতরে পানি ঢুকে যায়। চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল।”

তিনি বলেন, “হেলিকপ্টারে উদ্ধারের ট্রিপটি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো আমি। ওটা কোনো মজা ছিল না।”

এর আগে ‘এত ভয়ঙ্কর কিছু দেখেননি’ বলে জানিয়েছেন উদ্ধার পাওয়া আরেক যাত্রী জ্যানেট জ্যাকব। হেলিকপ্টার যাত্রাটিও ভয়ঙ্কর ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

রওয়ের পশ্চিম উপকূলে বিকল হয়ে পড়া দুই জাহাজ, এমভি ভাইকিং স্কাই ও হাগল্যান্ড ক্যাপ্টেনের অবস্থান। ছবি: মেরিটাইম বুলেটিন

এমভি ভাইকিং স্কাইকে সাহায্য করতে যারা প্রথমে এগিয়ে এসেছিলেন জেলে জান এরিক ফিসকারস্ট্রান্ড তাদের অন্যতম।

অপ্টেনপোস্টেন সংবাদপত্রকে তিনি বলেছেন, “আর একটু হলেই বিপর্যয় ঘটে যেত।”

‘ইঞ্জিন চালু করতে আর নোঙর বন্ধ করতে না পারলে’ জাহাজটি পাথরে ধাক্কা খেতে পারতো, বলেছেন তিনি।

স্থানীয় সময় ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ১৫৫ জন আরোহীকে তীরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। তবে এ সংখ্যাটি পরিবর্তিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ। 

 

এনআরকে জানিয়েছে, জাহাজটির আরোহীদের মধ্যে আট জন আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে তিন জনের অবস্থা গুরুতর বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যাত্রীদের অধিকাংশই ব্রিটিশ ও আমেরিকান বলে এনআরকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সমুদ্র থেকে উদ্ধারে নিয়োজিত সংস্থাগুলো জানিয়েছে, জাহাজটিকে স্থির রাখা সম্ভব হয়েছে এবং উদ্ধারকাজ চলছে।

কিছু ঢেউ ১০ মিটারেরও বেশি উঁচু বলে জানিয়েছে নরওয়ের আবহাওয়া ইনিস্টিটিউট।

কিছু লাইফবোট জাহাজটির দিকে রওনা হওয়ার পর উত্তাল ঢেউয়ের কারণে ফিরে আসতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় একটি সংবাদপত্র।